জাহিদুল ইসলাম, বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ
করোনা প্রকোপের কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ আছে সবধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।বিভিন্ন মেয়াদে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই বন্ধ বাড়ালেও ২০২১ সালের ২৪ মে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার তারিখ নির্ধারণ হয়েছিলো। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ওয়েভের কারণে তা সম্ভব হয়নি। আবারও ৩০ শে মে পর্যন্ত বেড়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি।এভাবে আরও কত দফা ছুটি বাড়তে পারে তা নিশ্চিত নয়।
এতে হুমকির মুখে শিক্ষাব্যবস্থা।
সবকিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুললেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার কোনো ইয়ত্তা নেই।যার ফলে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একযোগে যৌক্তিক দাবি নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ।আজ সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে তারা এ মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি ডিপার্টমেন্টের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল তানজিল বলেন,”আমাদের জীবন নিয়ে কেন এত প্রহসন? সবকিছু যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পারে তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলতে পারেননা?আমরা আবার দ্রুততম সময়ে ক্যাম্পাসে ফিরতে চাই এবং পড়াশোনায় মনোযোগী হতে চাই। “
একই ডিপার্টমেন্টের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান বলেন,”দেশের প্রত্যেকটা সেক্টর যেখানে খোলা,করোনার কোনো বালাই নেই,সেখানে শিক্ষার্থীদের এভাবে ঘরবন্দি রেখে শিক্ষাসিস্টেম ধ্বংসের প্রতিবাদস্বরূপ আমাদের আজকের মানববন্ধন।প্রত্যেকটা শিক্ষার্থীই আজ এক বছরের বেশি সময় যাবৎ অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।যার উত্তোলনের প্রাসঙ্গিক কোনো সমাধান এখনও শিক্ষামন্ত্রণালয় দিতে পারেনি।
লাখ লাখ শিক্ষার্থীর অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ আর শিক্ষাব্যবস্থাকে অন্তত বাচিয়ে রাখতে যতদ্রুত সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে আমাদের স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাবার প্রয়াসে আমরা সবাই একসাথে দাড়িয়েছি। অতিদ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিন।”
বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী সুস্মিতা দাস জানান,”একরাশ স্বপ্ন নিয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলাম। করোনা মহামারীর পরিস্থিতি অনুকূলে আনার জন্য বিগত ১৪ মাস আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।ফলে আমরা শিক্ষাব্যবস্থা থেকে দিনে দিনে পিছিয়ে পড়ছি।আমাদের দেশের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই অজপাড়াগাঁয়ে থাকে এবং দারিদ্র্যতার শিকার। ফলে তারা ইন্টারনেটের দূরাবস্থা এবং আর্থিক অনাটনের জন্য অনলাইনে ক্লাস করতে পারছে না।এবং দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের কারনে সেশনজটের সম্ভাবনা আছে। এটি আমাদের শিক্ষা জীবনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে।তাই সমস্ত দিক বিবেচনা করে অতিসত্বর আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া উচিৎ। যতদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে না ততোদিন আমাদের আন্দোলন চলছে,চলবে।”
মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী সুরুজ খান শুভ বলেন,সবকিছু সচল শিক্ষার্থীরা কেন অচল??
যেখানে আমরা নিজেরাই ক্যাম্পাস খোলার কথা বলছি।
সেখানে সরকার কেন দিচ্ছে না।
বৈরি শক্তির মাধ্যমে একটা দেশ ধ্বংস করার জন্য প্রথমে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করলেই হয়ে যায় । তার মানে কি সরকার নিজেই দেশকে ধ্বংস করে দিচ্ছে!
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে শিক্ষার্থীদের কেন মানববন্ধন করতে হবে?? প্রশাসনের কি চোখ নেই, তারা কি শিক্ষাব্যস্থার দূরাবস্থা দেখেনা? আমরা আবারও ক্যাম্পাসে ফিরতে চাই এবং তা অতিদ্রুত। “
অ্যাকাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম ডিপার্টমেন্টের ১ম বর্ষের মনির হোসেন বলেন,”আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় রীতিমতো ধস নেমেছে।এই করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার বাইরে। নামে মাত্র অনলাইন ক্লাস হয়। দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনিহার সৃষ্টি হচ্ছে। দেশের সব কিছু ঠিক মতো চললেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঠিকই বন্ধ রেখেছে। যা শিক্ষার্থীদেরকে মানসিক ভাবে পীড়া দিচ্ছে। তাই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।।”