তরিকুল ইসলাম, ক্যাম্পাস প্রতিনিধি, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে গত ১৮ মার্চ থেকে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি)। দীর্ঘ এই বন্ধে শিক্ষা জীবন দীর্ঘায়িত হবার আশংকা করছিলো শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে গত দু’মাস যাবৎ পরীক্ষামূলক অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশনা মোতাবেক গত ১৫ জুলাই থেকে অনলাইনে ক্লাস কার্যক্রম শুরু করেছে তারা। এই কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা চলমান রাখতে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন উপায়ে আর্থিক সহায়তা দেবার দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক -শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মোঃ খোরশেদ আলম বলেন, অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত হতে শিক্ষার্থীদের প্রধান সমস্যা মোবাইলের ইন্টারন্টে নেটওয়ার্ক এর দুর্বল স্পীড। এছাড়া অনেকেরই স্মার্ট ফোন কিংবা ল্যাপটপ নেই। এবং অনলাইনে যুক্ত হতে যে ডাটা কিনতে হচ্ছে তা ব্যয়বহুল। তিনি এজন্য সরকারের প্রতি শিক্ষার্থীদের জন্য ’সুদমুক্ত শিক্ষা ঋণ’ দাবি করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে চলমান অনলাইন ক্লাসে সকল শিক্ষার্থীর অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদানের দাবি করেছে ইসলামি শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। সংগঠনটির সভাপতি ও সম্পাদক গতকাল বৃহস্পতিবার এক যৌথ বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তারা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিম্নবিত্ত বা নিম্ন-মধ্যবিত্ত পর্যায়ের।প্রাইভেট টিউশন করিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রেখেছে এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যাই বেশি। করোনা মহামারীর কারণে প্রায় সকলকেই টিউশন খরায় ভুগতে হচ্ছে। এমতাবস্থায় অনলাইন ক্লাসের জন্য প্রয়োজনীয় ডাটা প্যাকেজ ক্রয় করা অনেকের পক্ষেই অসম্ভব। তাছাড়া স্মার্টফোন নেই এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কম নয়। তাই, এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদেরকে অন্তত ডাটা প্যাকেজ ক্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ প্রদান করে অনলাইন ক্লাসে সকলকে অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে দিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য এবং সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে তারা.
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নেতা মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ বরিশালের যেসকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেছে তাদের সবার প্রতি শিক্ষার্থীদের সমস্যা বিবেচনার আহবান জানিয়ে আসছি। সম্প্রতি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েও অনলাইন ক্লাস চালু হয়েছে। এই কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়বে যদি স্বল্প ও নিম্ন আয়ের পরিবার গুলোর শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা না করা হয়। তাই আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি তারা যেন অনলাইন ক্লাস কার্যক্রমে যুক্ত শিক্ষার্থীদের জন্য আর্থিক প্রণোদনার ব্যবস্থা করে।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টির সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকেও এ ব্যাপারে দাবি উঠেছে। মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান তমাল বলেন, অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত হবার জন্য কার্যকর ডিভাইস (স্মার্ট ফোন, ল্যাপটপ ইত্যাদি) কেনার সক্ষমতা সবার নেই। এছাড়া ধারাবাহিকভাবে অনলাইন ক্লাস করাটাও অনেকের জন্য ব্যায়বহুল। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীদের জরুরী ডাটা প্যাকেজ কেনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ নিঃশর্ত প্রদানের দাবী জানাচ্ছি। সেই সাথে অনলাইনে ক্লাস করার জন্য প্রয়োজনীয় ডিভাইস যাদের নেই তাদের জন্য বিনা সুদে আর্থিক ঋণ প্রদানের দাবি জানাচ্ছি।