রাবি প্রতিনিধি:
গত শনিবার (১১মে) রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের দু্ইপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা দাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনার এক দিন না পেরতেই ক্যাম্পাসে ফের উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।সোমবার (১৩ মে) রাত ২টার দিকে বিভিন্ন হল থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্রসহ মাদার বখশ হলের সামনে জড়ো হয়।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের সহ-সভাপতি আতিকুর রহমানের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা এ মহড়া চালায়। জড়ো হওয়া নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু এবং সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ-হিল-গালিবের অনুসারী। পরে রাবি প্রশাসন পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের বিভিন্ন কক্ষে তল্লাশি চালায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে হঠাৎ করে রাবির বিভিন্ন হল থেকে ছাত্রলীগের একপক্ষের নেতাকর্মীরা দেশিয় অস্ত্র নিয়ে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের কাছে জড়ো হতে থাকে। এসময় তারা সশস্ত্র অবস্থায় বাইরে থেকে পুরো হল ঘিরে রাখে।
এদিকে পূর্ব ঘটনার জেরে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে আগে থেকেই মোতায়েন করা ছিল পুলিশ সদস্য। সোমবার রাতে হলের গেট তালা ঝুলানো অবস্থায় ছিল। খবর পেয়ে পরে আরও কয়েক গাড়ি পুলিশ এবং পুলিশের গোয়েন্দা ইউনিটের (ডিবি) সদস্যদের হলের সামনে অবস্থান নেয়। রাত ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক প্রণব কুমার পাণ্ডে, প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক এবং ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সউদ।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ-হিল-গালিব বলেন, ‘জোহা হল এবং মাদার বখশ হলের ছাদ থেকে আমার নেতাকর্মীরা নিয়াজকে বহিরাগতসহ ডাইনিং এর ছাদ দিয়ে হলে ঢুকতে দেখে। বিষয়টা আমি জানতে পেরে প্রক্টরকে অবহিত করি। পরে প্রক্টর পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় হলে তল্লাশি চালায়।’
রাত সোয়া ৩টার দিকে প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হকের নেতৃত্বে হলে তল্লাশি চালায় পুলিশ ও ডিবি। প্রায় ২ ঘণ্টা পর হল থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রক্টর বলেন, ‘আমরা একটি সূত্র থেকে হলে বহিরাগত প্রবেশের খবর পেয়ে তল্লাশি চালাই। এসময় আমরা একটি চাইনিজ কুড়ালের অংশ বিশেষ পেয়েছি। এছাড়া কিছু সন্দেহজনক কক্ষে অভিযান চালাই। এসময় আমরা কিছু অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের পাই, তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় তাদের ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে হল প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।
একই হলে বারবার এমন ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রশাসনের ব্যবস্থার বিষয়ে তিনি বলেন, এটা হলের বিষয়। হল প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে বা ব্যবস্থা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানালে তখন আমরা ব্যবস্থা নেব।
হলের বাইরে একপক্ষের নেতাকর্মীরা রড, পাইপ এবং দেশিয় অস্ত্রের মহরার বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের চোখে এখনও এরকম দৃশ্য পড়েনি। হলে রাজনীতির বিষয়টা থাকায় আমরা উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করার চেষ্টা করছি।
সংঘর্ষের প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পার হলেও কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করেনি রাবি প্রশাসন। এই প্রসঙ্গে ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সউদ বলেন, ‘এটা হলের বিষয়। প্রথমে হল প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। তারপরেও সার্বিকভাবে পুরো বিষয়টা সমাধানের জন্য একটু সময় লাগছে। আমরা এরই মধ্যে এক দফা আলোচনা করেছি।’