28.5 C
Bangladesh
Friday, November 15, 2024
spot_imgspot_img
Homeআন্তর্জাতিকইসরায়েল-ফিলিস্তিন: পশ্চিম তীরকে অন্তর্ভূক্ত করার ইসরায়েলী প্রস্তাবের মারাত্মক পরিণতি নিয়ে ইউরোপীয় এমপিদের...

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন: পশ্চিম তীরকে অন্তর্ভূক্ত করার ইসরায়েলী প্রস্তাবের মারাত্মক পরিণতি নিয়ে ইউরোপীয় এমপিদের চিঠি

ছবিঃ সংগৃহীত

অধিকৃত পশ্চিম তীরের কিছু অংশ ইসরায়েলের অন্তর্ভূক্ত করার পরিকল্পনার কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে লেখা একটি চিঠিতে সই করেছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে এক হাজারের বেশি সংসদ সদস্য।

চিঠিতে এই প্রস্তাব সম্পর্কে “গভীর উদ্বেগ” প্রকাশ করা হয়েছে এবং এর “অবশ্যম্ভাবী পরিণতি”র কথা বলা হয়েছে।

এদের মধ্যে ব্রিটেনের ২৪০জন এমপি রয়েছেন।

এই অন্তর্ভূক্তি প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে আগামী সপ্তাহে। তার আগে এই চিঠি বেশ কিছু সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছে।

যে ক্ষমতা ভাগাভাগির চুক্তিতে গত মাসে ইসরায়েলের বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে, সেই চুক্তি অনুযায়ী পয়লা জুলাই থেকে এই অন্তর্ভূক্তির বিষয়টি নিয়ে ভোটাভুটি হবার কথা।

এই প্রকল্পে নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী বিনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি পশ্চিম তীরের বেশ কিছু এলাকা যেখানে ইহুদী বসতি রয়েছে, সেসব এলাকার ওপর ইসরায়েলের সার্বভৌমত্ব বিস্তার করতে চান।

এই বিল যদি পাশ হয়, তাহলে পশ্চিম তীরের ৩০% ইসরায়েলের অন্তর্ভূক্ত হবে। ফিলিস্তিনিরা দাবি করছে, ভবিষ্যতে তারা তাদের নিজস্ব যে স্বাধীন রাষ্ট্র চাইছে এই ভূমি তারই অংশ হবে।

এই অংশ ইসরায়েলের অন্তর্ভূক্ত করার বিষয়টিকে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিলেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কয়েক দশক ধরে চলা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত অবসানে জানুয়ারি মাসে মি. ট্রাম্প শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে তার প্রস্তাবে সমাধানের এই ফর্মূলা দেন।

‘শান্তির সম্ভাবনার মৃত্যু’
ইউরোপের দেশগুলোর পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের কাছে লেখা এই চিঠিতে হুঁশিয়ার করে দেয়া হয়েছে যে, পশ্চিম তীরের এসব অংশ একপাক্ষিক সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ইসরায়েলের অন্তর্ভূক্ত করা হলে তাতে “ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তির সম্ভাবনার মৃত্যু ঘটবে এবং তা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মূল যে ভিত্তিগুলো এটা তার জন্য বড় একটা চ্যালেঞ্জ হবে “।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাবের ফলশ্রুতিতে নেয়া ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চাপ বাড়ছে বলে জানাচ্ছেন জেরুসালেমে বিবিসির সংবাদদাতা টম বেটম্যান।

কী আছে চিঠিতে?
এই চিঠির উদ্যোক্তা ইসরায়েলী পার্লামেন্টের সাবেক স্পিকার আব্রাহাম বার্গ এবং ইসরায়েলের আরও তিন ব্যক্তিত্ব যারা পশ্চিম তীরে দুই রাষ্ট্র তত্ত্বের সমর্থক।

এই চিঠির মূল বক্তব্যে বলা হয়েছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পরিকল্পনা হল “খন্ডিত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে কার্যত ইসরায়েলের স্থায়ী নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে ফিলিস্তিনিদের কোন সার্বভৌমত্ব থাকবে না। এবং পশ্চিম তীরের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অংশ এর মাধ্যমে একপাক্ষিক ভাবে ইসরায়েল যাতে তার অংশ করে নিতে পারে তার জন্য আমেরিকার সবুজ সঙ্কেত দেয়া।”

এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন ২৫টি দেশের যে ১,০৮০জন সাংসদ, তারা হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন যে এই পদক্ষেপ ওই অঞ্চলে একটা “অস্থিতিশীলতার আশংকা” ডেকে আনবে।

তাদের চিঠিতে আরও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে যে এই অন্তর্ভূক্তি যদি “বিনা চ্যালেঞ্জে” পাশ হয়ে যায় তাহলে “আন্তর্জাতিক আইনের মূল নীতিকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে অন্যান্য দেশও তাদের আঞ্চলিক সার্বভৌমত্বের দাবি নিয়ে এগিয়ে যেতে উৎসাহিত হবে”। তারা স্পষ্ট করে না বললেও এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ইসরায়েল এই পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করলে এটা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর্যায়ে পড়ে।

বিশ্লেষকরা বলছেন মি. নেতানিয়াহু নভেম্বরে আমেরিকার আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই তড়িঘড়ি করে এই পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করতে চাইছেন। কারণ মি. ট্রাম্প যদি নির্বাচনে হেরে যান এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন ক্ষমতায় আসেন তাহলে এ ব্যাপারে আমেরিকান নীতি হয়ত বদলে যেতে পারে, কারণ মি. বাইডেন এই অন্তর্ভূক্তির বিপক্ষে।

সূত্রঃবিবিসি বাংলা

Most Popular

Recent Comments