এস,মন্ডল ,ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) থেকে;
দিনাজপুরের কমলার বাগান করে লাভবান হয়েছেন সাবেক সেনা সদস্য জহিরুল ইসলাম। বাগানে প্রতিটি গাছে ফল ধরেছে প্রচুর। ভারতীয় জাতের এই ফল সুস্বাধু হওয়ায় বাজারে চাহিদাও রয়েছে। এছাড়া বাগানটি দেখার জন্য প্রতিদিন দর্শার্থীরা ভিড় করছেন। বাগানেই বিক্রয় হচ্ছে ডারজিলিং,কাশমিরি ও চায়না জাতের কমলা।
দিনাজপুর নবাবগঞ্জ উপজেলার কালিরহাট বামনগড় গ্রামের কৃষি উদ্যোগক্তা সাবেক সেনা সদস্য জহিরুল ইসলাম অবসরে যাওয়ার পর দশ বছর আগে প্রথমে ৩৫ বিঘা জমির মধ্যে ১০ বিঘা জমিতে হাড়িভাঙ্গা আমের বাগান লাগান। গত ৭ বছর আগে সেই আমের বাগানের পাশে প্রায় ২৫ বিঘা জমিতে চায়না,কাশমিরি ও দারজিলিং জাতের প্রায় সাড়ে তিন হাজার কমলার চারা রোপন করেন। দুই বছরের মাথায় বাড়তে থাকে বাগানের পরিধি। গত দুই বছর ধরে সেই চারা গুলো ফল দিতে শুরু করেছে। উৎপাদিত বাগানের এইসব ফল স্থানীয় বাজারের চাহিদা পুরন করে পাঠানো হচ্ছে দেশের রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। উৎপাদিক কমলা ক্রয়ে দুর দুরান্ত থেকে ছুটে আসছেন কমলা ব্যবসায়ীরা। এখান থেকে প্রতিকেজি কমলা বিক্রয় হচ্ছে ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত।
এ অঞ্চলে প্রথমবার এতো বড় কমলার বাগান দেখতে আসছেন হাজার হাজার দর্শনার্থী, অনেকে সাথে কথা হলে তারা আনন্দ প্রকাশ করে বলেন আমরা আমাদের এলাকায় এতো বড় কমলার বাগান দেখি নাই। এখানে এসে নিজের হাতে কমলা পাড়ে কিনে নিয়ে যাচ্ছি। এখানকার কমলা গুলো সুস্বাধু ও মিষ্টি।
কমলা বাগানের শ্রমীক কয়ছার আলী বলেন, এখানে সারা বছর এখানে কাজ। এখান থেকে যা পাই তাই দিয়ে পরিবার নিয়ে সুখেই আছি। এমন কথা জানান, কমলা শ্রমীক মরিয়ম বেগম,আজিজার হোসেন,মকবুল সরকার।
কৃষিতে নিজের সফলতার দির্ঘ ১০ বছরের প্রচেষ্ঠার কথা জানান, সাবেক সেনা সদস্য মোঃ জহিরুল ইসলাম, আমি সেনা বাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর কি করবো তা নিয়ে হতাশায় ছিলাম। পরে আমি নবাবগঞ্জ উপজেলার এই জায়গাটি ক্রয় করি। সেখানে আজ থেকে ১০ বছর পূর্বে এখানে হাড়ী ভাঙ্গা আমের বাগান দেই। বেশ লাভবানও হই। পরে এখানে ড্রাগন চাষ করি। প্রায় ৫ বছর পূর্বে আমি প্রায় ২০ বিঘা জমিতে কমলার বাগান করি। বর্তমানে এই বাগানে সাড়ে ৩ হাজার কমলার গাছ রয়েছে। আমিসহ প্রায় ৩০জন শ্রমীক সারাবছর এই বাগানে কাজ করে থাকি। এবার নিয়ে দুই বর্ষর ধরে কমলার গাছে কমলা ধরছে। প্রতিবছর গাছ গুলোর আকৃতি পরিবর্তন হচ্ছে। এবছর এখন পর্যন্ত ১০ লক্ষ টাকার কমলা বিক্রয় করেছি। আশা করছি আগামী বছর আরো বেশি পরিমানে কমলা ধরবে। আরো বেশি লাভবান হবো।
এদিকে তার সফলতা দেখে অনেক কৃষকেই কমলা চাষের বিষয়ে তার কাছে পরামর্শ নিচ্ছেন বলে তিনি জানন।
নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রসেনজিৎ তালুকদার জানান, এ উপজেলায় ২৩ হেক্টর জমিতে লেবু জাতের চাষাবাদ হচ্ছে। এবার নতুন ভাবে স্থানীয় কৃষকের উদ্যোগে ১.৫ হেক্টও জমিতে কমলার চাষ হচ্ছে। আমরা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের পরার্মশ দিয়ে আসছি। এ উপজেলায় ছোট বড় ৩টি কমলার বাগান রয়েছে।