23.7 C
Bangladesh
Thursday, November 21, 2024
spot_imgspot_img
Homeকরোনা সচেতনণতাকরোনা টিকার রেজিস্ট্রেশন ও সচেতনতা ফেরি করে বেড়াচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

করোনা টিকার রেজিস্ট্রেশন ও সচেতনতা ফেরি করে বেড়াচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

জাহিদুল ইসলাম,ক্যাম্পাস প্রতিনিধিঃ-দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ই মার্চ।এরপর থেকে একেএকে সংক্রমণ ছড়িয়েছে দেশব্যাপী।৩১ জুলাই ২০২১ পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছে ১২ লাখ ৪৯ হাজার ৪৮৪ জন এবং আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে ২০ হাজার ৬৮৫ জন।প্রতিদিনই শনাক্তের ও মৃত্যুর হার বেড়েই চলেছে।করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে সবচেয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ হচ্ছে দেশের সকল মানুষকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা।প্রথমদিকে ৪০ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকদের টিকার আওতায় আনা হলে শহরের মানুষদের আগ্রহ থাকলেও গ্রামের মানুষদের টিকা নেওয়ার ব্যাপারে তেমন আগ্রহ ছিলোনা।টিকা নিয়ে গ্রামের মানুষদের মধ্যে সচেতনতার অভাব ও কুসংস্কারকে দায়ী করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ থাকায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী এখন নিজ এলাকায় অবস্থান করছেন।তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিজ উদ্যোগে গ্রাম অঞ্চলের মানুষদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে করোনা ভ্যাকসিনের প্রয়োজনীয়তা ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এতে মানুষদের মাঝে টিকা নিয়ে সংশয়,কুসংস্কার যেমনি কমেছে,তেমনি বেড়েছে টিকা নেওয়ার আগ্রহ। শিক্ষার্থীরা জানা,টিকা রেজিস্ট্রেশনের জন্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম ও টিকা ভীতি দূর করে শহরের মানুষদের মত গ্রামের মানুষদেরও টিকার আওতায় আনার জন্য কাজ গুলো করেছেন নিজেদের দায়িত্ববোধ এবং সমাজের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতার দিক থেকে।বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইনাল ইয়ারের শিক্ষার্থী নাজিম জানান,” বন্ধুদের সহায়তায় গ্রামে ফ্রি ভ্যাকসিন রেজিস্ট্রেশন শুরু করেছি। নিজেদের অর্থায়নে গ্রামবাসীদের রেজিস্ট্রেশন সহ কিছু অানুসঙ্গিক বিষয় বুঝিয়ে দিচ্ছি। আজ প্রায় ১২০ জনের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছি। ইনশাআল্লাহ, আগামী কাল সহ সামনের দিন গুলোতে এই কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।গ্রামবাসীদের ভ্যাকসিন নিয়ে কুসংস্কার দুর করা এবং ভ্যাকসিন নিতে উদ্বুদ্ধও করতেছি সাথে।আমরা যারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আছি, আমরা সবাই চেষ্টা করলে এলাকাবাসীদের সহজেই ভ্যাকসিন নিয়ে দুর্ভাবনা দূর করতে পারি। আমাদের শিক্ষার্থীদের উচিত এই কাজে এগিয়ে আসা। তাহলেই দেশ কে সহজেই করোনা থেকে মুক্তি করতে পারবো ইনশাআল্লাহ।”চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী জুনায়েদ আরাফাত অর্ণব বলেন,”শুরুটা এ বছরের মার্চের ১২ তারিখ,প্রথম করোনার ভ্যাক্সিন প্রদান শুরু হওয়ার পর পরই,বিশেষ করে আমার আব্বুর সার্বিক সহায়তা এবং উৎসাহে আমাদের কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার ভারেল্লা দক্ষিন ইউনিয়নের গ্রামে গ্রামে অনলাইনে করোনা ভ্যাক্সিন রেজিস্ট্রেশন করে টিকা কার্ড সংগ্রহ করে দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করি। সে সময় প্রায় পাঁচ-ছয় শত মানুষকে এই সেবা প্রদান করি। তারপর কুরবানের ঈদে গ্রামে গিয়ে গত এক সপ্তাহের বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ঘুরে আমাদের রামপুর গ্রামের ৮/৯ জন ছাত্রের সহায়তায় সকলের মোবাইলে ভ্যাক্সিন রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে, টিকা কার্ড প্রিন্ট করে সবাইকে প্রদান করি আমরা। যেই লেপটপ দিয়ে মেইলে এনে টিকা কার্ড প্রিন্ট করা হয়েছে সেই মেইল বক্সে আড়াই হাজারের অধিক টিকা কার্ড রয়েছে। এভাবে গ্রামে গ্রামে ঘুরে মানুষকে ভ্যাক্সিন নিতে উৎসাহিত করা এবং টিকা কার্ড সংগ্রহ করে দিয়ে এই আড়াই হাজারের অধিক মানুষের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করার মধ্যে প্রাপ্তি হলো একটি অন্যরকম অনুভূতি, মানুষকে সহায়তা করতে পারার আত্ম তৃপ্তি এভাবে আপনারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত সকল শিক্ষার্থীরা তাদের গ্রামের মানুষকে টিকা নিতে উৎসাহিত এবং সহায়তা করতে পারেন।”জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহমেদ সজিব বলেন,”আমরা বন্ধুরা মিলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তেজখালী ইউনিয়নের বাহেরচর ও বিষ্ণুরামপুর গ্রামের প্রায় ৫ শতাধিক মানুষকে করোনা টিকার নিবন্ধন ফ্রিতে করিয়ে দিয়েছি এবং এইসময় অনেকে উপজেলায় গিয়ে টিকা দিতে অনীহা প্রকাশ করায়,টিকা আরো সহজলভ্য করার লক্ষ্যে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ক্লিনিকে টিকা নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে।”

Most Popular

Recent Comments