কলাপাড়াপ্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর
কলাপাড়ায় এক কথিত ভন্ড পীরের সন্ধ্যান মিলেছে। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে টিয়াখালী ইউপির উত্তর নাচনাপাড়া গ্রামে পীর সাহেব নাচনাপাড়া নামে প্রচার দিয়ে মানুষকে বোকা বানাচ্ছেন। ঐ লোক গরীব শ্রেণীর মানুষকে টার্গেট করে তাদের বিদেশে পাঠিয়ে অর্থবিত্তের মালিক বানিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। তবে কথিত এই পীর ও তার সহকারী আলামিনের বিরুদ্ধে কলাপাড়া জুডিশিয়াল মেজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগী দুটি পরিবার।
ভুক্তভোগী ওই পরিবারগুলোর অভিযোগ, চার মাস আগে নাচনাপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর হাওলাদারের পুত্র পারভেজ ও আলমগীর হাওলাদারের পুত্র সাইমকে বিদেশ পাঠানোর কথা বলে ৯ লাখ টাকা নেয় কথিত পীর সাহেব নাচনাপাড়া ওরফে আবুল কালাম মোল্লা। পরে সৌদি আরবের একটি আবাসিক হোটেলে চাকুরির কথা বলে কথিত এই পীরের মাধ্যমে ওই দুই যুবককে বিদেশ পাঠানো হলেও বর্তমানে সেখানে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা। প্রবাসী পারভেজের মা কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, পীর সাহেব আল্লাহর মসজিদ ঘরে বসে কসম দিয়ে আমার ছেলে এবং ছেলের চাচাতো ভাইয়ের কাছ থেকে নয় লাখ টাকা নিয়েছেন বিদেশে চাকুরির কথা বলে। কথা ছিল সৌদিতে প্রতিদিন কাবা শরীফে নামাজ পড়বে আর ছেলেরা একটি হোটেলে চাকুরি করবে। কিন্তু বিদেশ যাওয়ার পর চার মাস যাবৎ ছেলেরা খেয়ে না খেয়ে আছে। বর্তমানে গত তিনদিন যাবৎ তাদের আটকে রাখা হয়েছে একটি ঘরে। এবং সেখানে তাদের পানি ছাড়া কিছুই খেতে দিচ্ছেন না পীর সাহেবের সৌদির দালালরা। তিনি বলেন, এখন ছেলেদের দেশে ফিরিয়ে আনতে ফের ১০ লাখ টাকা দাবী করছেন কালাম মোল্লা। এমনকি একটি কাগজে স্বাক্ষর চাইছেন তিনি। এ কথা বলতে বার বার মূর্ছা যাচ্ছিলেন প্রবাসে অনাহারে থাকা পারভেজের মা লুৎফা বেগম। অপর দিকে স্থানীয় বাসীন্দাদের অভিযোগ, নিজের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলসহ উত্তর নাচনাপাড়া হোসাইনিয়া খানকার গেটে পীর সাহেব নাচানাপাড়া নেইম ফলক লাগিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ মানুষকে তদবীর, ঝাড়, ফুক দিয়ে যাচ্ছেন আবুল কালাম মোল্লা।
স্থানীয়রা বলছেন, এক সময়ে সাইকেল মেকানিক কিভাবে হঠাৎ করে পীরের তকমা লাগিয়ে দুইজন খলিফা রেখে কার্যক্রম চালাচ্ছেন। এনিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিদের মাঝেও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
তবে এবিষয়ে পীর সাহেব নাচনাপাড়া ওরফে কালাম মোল্লা জানান, চাঁদপুরের প্রতাবপুর হাজীগঞ্জ থেকে তিনি এজাজৎ পেয়ে পীরের কর্মকান্ড চালাচ্ছেন। মূলত তিনি জ্বীনে আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিয়ে থাকেন অর্থের বিনিময়ে। এছাড়া ভিসা দিয়ে বিদেশে যাদের পাঠিয়েছেন তাদের কোন সমস্যা হচ্ছে না। তারা ভালো আছেন। এক শ্রেনীর মানুষ তাকে নিয়ে অপপ্রচার ও বিরুপ মন্তব্য করছেন।
কলাপাড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ জানান, কোর্টে মামলা হয়েছে কিনা জানা নেই। মামলার তদন্ত ভার পুলিশকে দেয়া হলে অনুসন্ধ্যান করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এছাড়া তার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।