28.5 C
Bangladesh
Friday, November 15, 2024
spot_imgspot_img
Homeশিক্ষাখাদ থেকে উঠে দাঁড়িয়ে ৩৮তম বিসিএসে ক্যাডারে কাহারুজাম্মান -

খাদ থেকে উঠে দাঁড়িয়ে ৩৮তম বিসিএসে ক্যাডারে কাহারুজাম্মান –

মোহাম্মাদ রতন,
পীরগঞ্জ(রংপুর) প্রতিনিধিঃ-
হার না মানা অবশেষে ৩৮তম বিসিএস এর জয় কাহারুজ্জামান।রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ০১নং চৈত্রকল ইউনিয়নের ঝাড়বিশলা গ্রামের নিভৃত পল্লীতে ১৯৮৭সালে জন্ম নেন কামরুজ্জামান।পিতা মরহুম আব্দুল জলিল তালুকদার ও মাতা মোছাঃ মাজেদা বেগম।তার দুই মা,ছয় ভাই এক বোনের মধ্যে পরিবারের সবার ছোট সে।শাল্টির পালগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় তার প্রথম প্রাথমিক শিক্ষা জীবন শুরু।তারপর ০২নং ভেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের,ভেন্ডাবাড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাধ্যমিক গণ্ডি পেরিয়ে পীরগঞ্জ উপজেলার আব্দুর রউফ কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। প্রথমে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হয়,পরে আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়ে।রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বাদ দিয়ে,আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের স্নাতক ও স্নাকোত্তর পাস করেন।
মাস্টার্স শেষ করার পর।তার চাকরির বয়স ছিল মাত্র ২ বছর।প্রথমে তিনটা বিসিএস ৩৩তম,৩৪তম,৩৫তম দিতে পারেনি।তারপর ৩৬তম ৩৭তম বিসিএস এ ব্যর্থ হন।তিনি অনেকটাই হতাশ হলেও তিনি ছিলেন নাছোরবান্দা হাল ছাড়েনি।


একেবারে খাদ থেকে উঠে আসা আর খাদে পড়ে গিয়ে আবার উঠে আসা এ দুয়ের পার্থক্য অনেক।তেমনই কাহারুজাম্মান হলো ওপার থেকে পড়ে গিয়ে আবার উঠে আসা একজন মানুষ।
একাডেমিকালে ৪ বছর পিছিয়ে যায়,তখন তার বন্ধুরা যখন অনার্স শেষ করে ।তখন সে আবার নতুন করে তার শুরু।দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ এমন অবস্থা দেখে সবার মনোবল হারালে তার মনোবল হারাইনি।তার নানা ব্যর্থতা আর শত প্রতিবন্ধকতার মাঝেও বিসিএসসহ বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য সে “ইজি ভোকাবুলারি”একটি বই প্রকাশ করেছেন।তার কর্মস্পৃহা হার না মানার মতো সাহস তার বন্ধুদের অভিহিত করে তুলে।

তারা পড়াশুনার চরম ব্যর্থ হওয়া সংগ্রামের কথা জানান তার হলের ছোট ভাই পলাশ বলেনঃ এই সেই কাহার ভাই, যাকে কোনদিন হতাশ হতে দেখিনি! নিজের চোখের সামনে শত চাকরির পরীক্ষা দিতে দেখেছি, আবার ব্যর্থ হতে দেখেছি, তবুও হতাশ হতে দেখিনি। মুখে শুনেছি আলহামদুলিল্লাহ! তখন ভাইকে একটি কথাই বলতাম, ভাই সামনে ভালো কিছু আছে। ভাই বলতো, হয়ত! ভাই এমন একজন মানুষ, যাকে সূর্যসেন হলের সবাই চেনে। ভাইয়ের হলের ছোট ভাই হওয়ার কারণে ভাইয়ের অজানা অনেক কিছুই জানা হয়ে গিয়েছিলো!
জীবনযুদ্ধে হার না মানা এক অকুতভয়ী বীরের নাম কাহার ভাই! সূর্য সেনের কাহার ভাই!ভাই আমার জীবনে অনেক বড় অনুপ্রেরণা! আমার জীবনে এখনো হতাশার কোন ছায়া আসলেই, মনে পড়ে আমারতো একটা কাহার ভাই ছিল, যে হাজারো পরিক্ষায় ব্যর্থ হয়েও কখনো হতাশ ছিলনা। আমারও জীবনে হতাশ হওয়া যাবে না! জীবনে পরিশ্রম করলে সফলতা আসবেই।

জীবন মানেই বেঁচে থাকার সংগ্রাম আর এই সংগ্রামে সেই টিকে থাকতে পারবে যার নিজেরপ্রতি রয়েছে পর্যাপ্ত আত্মবিশ্বাষ।তার সকল ব্যর্থতার মধ্যেও হাল না ছাড়া কারণ জানতে চাইলে কাহারুজাম্মান বলেনঃবিসিএস অর্জন”এই পথ আমার ঠিকানা-আমি আর কিছু চাই না,আমাকে বিসিএস হতেই হবে,জীবনে পড়ালেখার ব্যর্থতা আসতেই পারে কখনো হতাশা হওয়া যাবে না,মনোবল অটুট রাখতে হবে,আমি পারবো আমিও পারবো এই মনোবলের সাহস রাখতে হবে ,আমি যা ধরি তার শেষ দেখে ছাড়ি,আমার ৩৮তম বিসিএস এ ছিল শেষ পরীক্ষা।আমি অনেক পরিশ্রম করেছি আমি পেরেছি। নতুন দের জন্য বলতে চাই বিসিএস পাওয়ার জন্য উদ্দ্যগীয় হতে হবে প্রচুর পড়াশুনা করতে হবে,অনেক পরিশ্রম করতে হবে তবেই সম্ভব বিসিএস এ সফল হওয়া।আমি আমার পরিবারের মুখ উজ্জল করতেপেরেছি আমি ব্যর্থহয়েও আজ সফলতা অর্জন এটা আমার অনেক পাওয়া,আমার মরহুম বাবার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি আল্লাহ যেনো তাকে জান্নাত নসিব দান করেন।তার থেকে শিখেছি কিভাবে ব্যর্থতার মাঝে সামনের দিকে এগিয়ে জয় লাভ করা যায়।ধন্যবাদ সেই সকল বন্ধুদের যারা আমার দূর্সময়ে আমার পাশে ছিল।
কাহারুজাম্মান ৩৮তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত।তার জন্য দোয়া ও শুভকামনা অভিনন্দন জানান তার গ্রামের সুশীল সমাজ,আমাদের গর্ব আমাদের এলাকার গর্ব তার সার্বিক মঙ্গলকামনা করেন এলাকাবাসী।

Most Popular

Recent Comments