ঠাকুরগাঁওয়ে দুই দিনের ভারী বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় পৌরসভার দুই শতাধিক পরিবার শহরের শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে।
বজ্রপাতে কৃষকসহ মারা গেছেন দুই জন। তারা হলেন রাণীশংকৈল উপজেলার শান্ত রায় (২২) এবং পীরগঞ্জ উপজেলার গরুরা ফুলবাড়ি গ্রামের কৃষক আজিমুল হক (৪০)।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে দেখা গেছে, টাঙ্গন নদী সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় কয়েকশ ঘরবাড়ি জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। ঘরে পানি ঢোকায় সেসব পরিবারের সদস্যরা শহরের শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উপজেলার যেসব বাড়িতে পানি উঠেছে তাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে ।
এদিকে, অতিবৃষ্টিতে খেত ডুবে যাওয়ায় ফসলহানির আশঙ্কা করছেন কৃষক।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আফতাব আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত চব্বিশ ঘণ্টায় জেলায় ১৩৩.৮ মি.মি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
বুধবার রাত ৯ টা থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১০টা পর্যন্তও বৃষ্টি হচ্ছিল।
আফতাব আহমেদ বলেন, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন ফসলের খেতে পানি জমে গেছে। আগের সপ্তাহের মতো বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে আমন বীজতলা, ভুট্টা, মরিচ ও শাকসবজির খেতগুলি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে ।
তবে তিন-চার দিন বৃষ্টিপাত না হলে খেত থেকে পানি সরার সুযোগ পাবে, সেক্ষেত্রে ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি ।
কী পরিমাণ বীজতলা ও ফসল পানিতে ডুবে গেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাগণ তা নিরূপণে কাজ করছেন।
ঠাকুরগাঁওয়ের কলেজপাড়ার কৃষক আদম আলী (৪৫) জানান, তিনি টাঙ্গন নদী সংলগ্ন এলাকায় দশ বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছেন। ফল পরিপূর্ণ হওয়ার আগ মুহূর্তে ভারী বর্ষণে ভুট্টার গাছগুলি পানিতে তলিয়ে গেছে। যদি চার-পাঁচদিন গাছের গোড়াসহ বেশির ভাগ অংশ পানিতে থাকে তাহলে গাছের গোড়া পঁচে যাবে। এতে শেষ পর্যায়ে এসেও আর কোন ফসল ঘরে তোলা যাবে না।
উপজেলার ছুট বঠিনা গ্রামের মনিরাম বর্মণ বলেন, আমন বীজতলা তলিয়ে গেছে অতি বর্ষণে। এমন বৃষ্টিপাত চলতে থাকলে বীজতলা সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়ে যাবে । এতে একদিকে অর্থের ক্ষতি হবে, অপরদিকে সময়মত আমন চারা বপন করা হবে না বলে জানান তিনি ।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, পাঁচটি উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দের বন্যার কবলে পড়া পরিবারের তালিকা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এসব পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেয়ার জন্য ইতোমধ্যে ১২ লাখ টাকা ইউএনওদের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
খবরঃডেইলী স্টারের সৌজন্যে