20.2 C
Bangladesh
Friday, December 27, 2024
spot_imgspot_img
Homeক্যাম্পাসডাকসুর নির্বাচন ফের কবে;প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের।

ডাকসুর নির্বাচন ফের কবে;প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের।

২৯ বছরের অচলায়তন ভেঙে গত বছরের ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় দেশের দ্বিতীয় পার্লামেন্ট খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। ২৩ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন নবনির্বাচিতরা। নানান ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে গত ২২ মার্চ এক বছরের মেয়াদ পূর্ণ করে বর্তমান কমিটি। দীর্ঘ দিনের বন্ধ্যাত্ব ঘুচিয়ে ছাত্ররাজনীতিতে এক নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে ডাকসু। ডাকসুর কর্মকাণ্ডে সরকার তথা সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনের আধিপত্য থাকলেও শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে সোচ্চার ছিল বর্তমান কমিটি। তাই শিক্ষার্থীদের আশার পালে হাওয়া লাগিয়েছে ডাকসু। তবে এ নির্বাচনের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে কি না কিংবা থাকলেও কবে হবে সেই নির্বাচন সেটাই এখন প্রশ্ন সবার মনে।

বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পরে অনুষ্ঠিত হয় বহুল আকাক্সিক্ষত ডাকসু নির্বাচন। তবে ডাকসু নির্বাচনেও ওঠে ভোট কারচুপি বা নিয়ন্ত্রিত ভোটের অভিযোগ। নির্বাচনের ঘোষিত ফলাফলে ২৫টি পদের ২৩টিতে জিতে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। আর চাকরিতে কোটা সংস্কারকে ঘিরে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের প্যানেল থেকে ভিপি পদে নুরুল হক নূর ও সমাজসেবা পদে আখতার হোসেন নির্বাচিত হন।

এ দিকে গতকাল মেয়াদ শেষ হওয়ার দিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজেকে সাবেক ঘোষণা করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন এজিএস এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। সেই সাথে আরো একাধিক নেতা ফেসবুকে নিজেকে সাবেক দাবি করেছেন। ডাকসুর পরবর্তী কার্যক্রম কী হবে তা আলোচনার মাধ্যমে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন ভিপি নুরুল হক নূর। তবে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত স্বপদে থেকে অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার সুযোগ দেয়ার কথা জানিয়েছেন ভিপি নূর ও জিএস গোলাম রাব্বানী।

এর আগে শিক্ষার্থীদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা গত বছরের ২৩ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বগ্রহণ করেন। এই সংসদের মেয়াদ চলতি বছরের ২২ মার্চ এক বছর পূর্ণ হয়। তবে এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়ায় মেয়াদ আরো ৯০ দিন বৃদ্ধি করা হয়।

আগামী নির্বাচন পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের বিষয় জানিয়ে ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় আমরা নির্দিষ্ট সময়ের দায়িত্ব পালন করতে পারিনি। তাই আমাদের দাবি, বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হলেও পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আমরা যাতে দায়িত্ব পালন করতে পারি।

তিনি আরো বলেন, গত ২২ মার্চ ডাকসুর এক বছর পূর্ণ হয়েছে; আপনি যদি সে হিসেবেই ধরেন তাহলে গত ১৮ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এরপর আর কোনো কার্যদিবস যায়নি। সে হিসেবে আমাদের ৯০ দিন পূর্ণ হতে এখনো বাকি আছে। এ বিষয়ে শিগগিরই ডাকসুর সভাপতির সাথে আমরা আলোচনায় বসবো। তবে অবশ্যই ডাকসু নির্বাচনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার দাবি জানাচ্ছি। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এ প্রত্যাশা থাকবে।

জিএস গোলাম রাব্বানী বলেন, বর্তমান সংসদ বাতিল হয়ে যাওয়ার চেয়ে পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত এ সংসদ যাতে দায়িত্ব পালন করতে পারে, সে দাবি আমরা ভিসির কাছে উপস্থাপন করব। করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় আমরা নির্দিষ্ট সময়ের দায়িত্ব পালন করতে পারিনি। সেজন্য পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে চাই।

এ দিকে মেয়াদ শেষ হওয়ার দিন গতকাল সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাবেক ঘোষণা দিয়েছেন ডাকসু এজিএস সাদ্দাম হোসেন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসিফ তালুকদার, সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন, সদস্য রকিবুল ইসলাম ঐতিহ্যসহ অনেকেই।

এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানতে চাইলে ডাকসুর সদস্য তানভীর হাসান সৈকত বলেন, আজ মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার কথা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমরা এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। পরবর্তী ডাকসু নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে বর্তমান কমিটি ভেঙে দিতে হবে। কিন্তু আমরা এ বিষয়ে এখনো কিছুই জানি না।

ফের কবে হবে ডাকসু নির্বাচন? শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এমন প্রশ্নের ভিত্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং ডাকসুর সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবকিছু গঠনতন্ত্র মেনেই করা হবে। আমাদের গঠনতন্ত্রের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে ভাবছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন অনেক লম্বা প্রক্রিয়া। অনেক কিছুর সমন্বয় করেই আমাদের এগোতে হবে।

খবর ঃক্যাম্পাস টাইম প্রেসের সৌজন্যে

Most Popular

Recent Comments