দাগনভূঞা প্রতিনিধি:
দাগনভূঞায় আইপিএম কৃষক মাঠ স্কুলের শিক্ষার্থীরা হলেন স্থানীয় কিষাণ-কিষাণি। তাদের নিয়ে গড়ে তোলা এই স্কুলে ব্যবহারিক শিক্ষা, পাঠদান করেন উপজেলা কৃষি অফিসের প্রশিক্ষকরা। কিষাণ-কৃষাণিরা শিখছেন কীভাবে নিরাপদ ফসল উৎপাদন করে লাভবান হবে। কৃষক মাঠ স্কুলে সপ্তাহে এক দিন বসে ক্লাস। শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৫ জন। তাদের সবাই শেখেন চাষাবাদের আধুনিক প্রযুক্তি ও নিরাপদ ফসল উৎপাদনের কৌশল। উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের জয়নারায়নপুর গ্রামে সরেজমিনে দেখা মেলে এই কৃষক মাঠ স্কুলের। কিষাণ-কৃষাণিরা শিখছেন বিভিন্ন ফসল উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণের নানা কৌশল। তাদের দেওয়া হয়েছে প্রকল্প থেকে খাতা-কলম। কৃষকরা তাতে লিখে রাখেন প্রতিদিনের পাঠ। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় উপজেলায় বর্তমানে ২টি কৃষক মাঠ স্কুল রয়েছে। এসব স্কুলে ২৫ জন করে ২টি স্কুলে ৫০ জন কৃষক শিক্ষা নিচ্ছেন নতুন প্রযুক্তি গ্রহণের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদনের পদ্ধতি। আর সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে বসতবাড়িতেই সবজি চাষসহ বাণিজ্যিকভাবে কৃষির ইতিবাচক পরিবর্তন আনছেন তারা। প্রশিক্ষিত কৃষকরা তাদের আশপাশের কৃষকদের অর্জিত জ্ঞান বিনিময়ের মাধ্যমে বিষমুক্ত ফসল উৎপাদক সহায়ক ভূমিকা রাখবে মনে করছে উপজেলা কৃষি অফিস। স্কুলের শিক্ষার্থী কৃষক জিয়াউল হক বলেন, ‘আমরা প্রচলিত পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতাম। না বুঝে যখন-তখন জমিতে বিষ ছিটাতাম। এতে খরচ বাড়ত। স্কুল থেকে জেনেছি এতে পরিবেশও দূষিত হয়। এখন আমরা উপকারী ও ক্ষতিকর পোকা চিনে সে অনুযায়ী কীটনাশক ছিটাই।’ এছাড়াও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে জৈব বালাইনাশক পদ্ধতি ব্যবহারও শিখেছি। দাগনভূঞা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের জয়নারায়নপুর এলাকায় কৃষক মাঠ স্কুলে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ লুৎফুল হায়দার ভূঁইয়া। এসময় উপস্থিত ছিলেন দাগনভূঞা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন, উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ফাহিম উদ্দিন কৃষি বিভাগ সূত্রে আরও জানা গেছে, প্রকল্প থেকে টিওটি (বিশেষ প্রশিক্ষণ) করে কৃষক মাঠ স্কুল পরিচালনা করছেন। উপজেলায় ২টি আইপিএম কৃষক মাঠ স্কুল পরিচালিত হচ্ছে। ধান,সবজি, ফল ও বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে স্কুলগুলোতে কৃষকদের কীটনাশক ব্যবহার না করে পরিবেশবান্ধব উপায়ে ফসল উৎপাদনের শিক্ষা দেওয়া হয়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ মহিউদ্দিন মজুমদার বলেন, দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে। এখন নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের বিষয় নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। এ ধরনের আইপিএম স্কুল, কৃষকদের সচেতনতা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে।