আবদুল্লাহ আল মামুন :
ফেনীর দাগনভূঞায় ইসলামি ব্যাংকের দাগনভূঞা শাখা থেকে তারেকের রহমান নামের এক ব্যবসায়ী ৪ লাখ টাকা তুলে যাত্রীবাহী সিএনজিযোগে উপজেলার পূর্বচন্দ্রপুর মডেল ইউনিয়নের আমুভূঞার হাট যাচ্ছিলেন। এসময় পৌর এলাকার গজারিয়া রোডের ফিশারী’র মোড় সংলগ্ন পৌঁছালে পথিমধ্যে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ পরিচয় দিয়ে তারেককে একটি প্রাইভেটকারে তুলে নেয় ৫ জন লোক। এরপর একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে অস্ত্রের মুখে তারেককে ভয়ভীতি দেখিয়ে এবং হাতে হাতকড়া পরিয়ে টাকা কেড়ে নিয়ে তাকে কুমিল্লা জেলার লালমাই নামক স্থানে নিয়ে গাড়ি থেকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে দ্রুতই পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। গত সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে দিকে ঘটনাটি ঘটে।
ভুক্তভোগী তারেক উপজেলার পূর্বচন্দ্রপুর মডেল ইউনিয়নের আমুভূঞার হাটে রুবেল টেলিকম এন্ড কম্পিউটার, মোবাইল এক্সোসরিজ ও বিকাশের দোকান রয়েছে। সে ওই এলাকার আমান উদ্দিন বেপারী বাড়ির রমজান আলীর ছেলে।
ভুক্তভোগী ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, ওইদিন (৬ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে তিন ঘটিকার সময় ইসলামি ব্যাংক দাগনভূঞা শাখা থেকে তার নিজ নামীয় সঞ্চয় হিসাব নম্বর ১৬৮১৩ থেকে ২ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ও
এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের হিসাব নম্বর ৪১৪২৯৪ থেকে ১ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা মোট ৪ লাখ টাকা নগদ উত্তোলন করেন। টাকা উত্তোলন করে কাঁধে ব্যাগ রেখে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে বিকেল চারটার পরে দাগনভূঞা বাজারের গজারিয়া রোডে সিএনজি স্ট্যান্ডে যাত্রীবাহী সিএনজি অটোরিকশা ড্রাইভার সিটের বাম পার্শ্বে বসে যাচ্ছিলেন। পরে পৌর এলাকার গজারিয়া রোডের একটি মাছের ফিশারী সংলগ্ন মোড় পর্যন্ত পৌঁছালে সামনের দিক হইতে একটি সাদা পুরাতন প্রাইভেট কার আসিয়া সিএনজিটিকে থামানোর জন্য সংকেত প্রদান করে এবং প্রাইভেট কারের পিছনের সিট হইতে অজ্ঞাতনামা ৩ জন লোক তড়িঘড়ি করিয়া রাস্তায় নামে। সিএনজি ড্রাইভার সিএনজি থামাইলে ওই তিনজন লোক দৌড়াইয়া তারেকের সামনে আসে এবং ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়া তারেকের কাছে ইয়াবা আছে বলিয়া তাকে সিএনজি হইতে নামা। পরে যাত্রীবাহী সিএনজি অটোরিকশা চলিয়া গেলে ওই তিনজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাকে টানা হেঁচড়া করিয়া তাকে প্রাইভেট কারে উঠাইয়া ফেলে এবং স্থানীয় পৌর এলাকার পাকিস্তান বাজার নামক স্থানে নিয়ে যায়। প্রাইভেট কারের পিছনের সিটে আরও দুইজন অজ্ঞাতনামা লোক ছিল। এরই মধ্যে প্রাইভেট কারের পিছনের সিটে থাকা অজ্ঞাতনামা ২ জন এবং অপর তিনজন সহ মোট ৫ জন ব্যক্তি তারেককে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মারিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে কালা ফুলা জখম করে। পরে হাতকড়া পরিয়ে ও মুখে চাপিয়া ধরে। তারেকের রক্ষিত ৪ লাখ টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে যায় এবং মোবাইলে থাকা দুটো সিম কার্ড ফেলে দেয়। পরে তারেককে কুমিল্লা জেলার লালমাই নিয়া যায়। অজ্ঞাতনামা দূর্বৃত্তরা করাত দিয়ে তারেকের হাতের হ্যান্ডকাপ কাটিয়া, চোখের বাঁধন খুলিয়া তাকে রাস্তায় ফেলিয়া দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে তারেককে স্থানীয়দের সহযোগিতায় লালমাই আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে যায় এবং দায়িত্বরত সেনাসদস্যেদের ঘটনার বিস্তারিত খুলে বলেন। সেনাসদস্যেরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন। পরে তার পরিবারের সদস্যদের খবর দেন। খবর পেয়ে তারেকের ভাই আরিফ ও স্বজনরা দ্রুত লালমাই এসে তারেককে দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওইদিন রাত প্রায় ১২টার দিকে ভর্তি করান। পরে তারেক নিজে বাদি হয়ে দাগনভূঞা থানায় অজ্ঞাতনামা ৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ভুক্তভোগী তারেক এঘটনায় বর্ণিত অজ্ঞাতনামা বিবাদীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান।
থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, তারেকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।