কুলাউড়া প্রতিনিধি:: মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় কাঠ পাচারের ঘটনায় জড়িত সেই যুবলীগ নেতা এবার একটি মাজারের দানবাক্স ভেঙে টাকা নেওয়ার চেষ্টাকালে স্থানীয় লোকজনের হাতে ধরা খেয়ে জেল হাজতে গেছেন।
ঘটনাটি বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে্ উপজেলার সদর ইউনিয়নের রেহেনা চা-বাগান এলাকায় অবস্থিত শাহ সুন্দর (আদাআদির) মাজারে ঘটে। দানবাক্স ভেঙে টাকা নেওয়ার চেষ্টাকালে স্থানীয় লোকজন যুবলীগের এক নেতাকে পিটুনি দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। ওই যুবলীগ নেতার নাম সুফিয়ান আহমদ (৪০)। তার বাড়ি উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের দানাপুর গ্রামে। তিনি কুলাউড়া পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক।
এর আগে গত শুক্রবার কুলাউড়ার বনবিট থেকে পিকভ্যানে করে কাঠ পাচারকালে হাতেনাতে ধরা খেয়েও বন বিভাগের মামলায় তার নাম দেওয়া হয়নি।
চা-বাগান কর্তৃপক্ষ, বাগানের শ্রমিক ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সুফিয়ান ওই মাজারের খাদেম ছিলেন। কিন্তু, মাজারের আয়-ব্যয়ের হিসাব না দেওয়ায় এবং সম্প্রতি পিকভ্যানে করে কাঠ পাচারের ঘটনায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় গত মঙ্গলবার তাকে ওই পদ থেকে অব্যাহতি দেন মাজার কমিটি।
এরপরও সুফিয়ান যুবলীগ নেতার দাপট দেখিয়ে মজারের নিয়ন্ত্রণ নিতে বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালান। বুধবার বিকেলের দিকে সুফিয়ান প্রথম দফায় মাজারে যান। একপর্যায়ে তিনি দানবাক্সের তালা ভাঙার চেষ্টা চালান। কয়েক জন শ্রমিক ছুটে গিয়ে তাকে বাধা দেন। এ সময় তিনি তাদের বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দিয়ে চলে যান। পরে রাত আটটার দিকে সুফিয়ান আবারও সেখানে গিয়ে দানবাক্সের তালা ভেঙে টাকা নেওয়ার চেষ্টা চালান। এ সময় বাগানের শ্রমিকেরা জড়ো হয়ে তাকে পিটুনি দেন। এর পর তাকে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুলাউড়া থানার পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। পরে সুফিয়ানকে তাদের কাছে সোপর্দ করা হয়।
রেহেনা চা-বাগানের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, সুফিয়ান জোর করে মাজারের দানবাক্স ভেঙে টাকা নেওয়ার চেষ্টা চালান। হুমকি-ধমকি দেওয়ায় শ্রমিকেরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মারধর করে আটকে রাখেন। এ ব্যাপারে বাগানের মালিকপক্ষ ও শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কুলাউড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ আলম ভূঁইয়া বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে বলেন, এ বিষয়ে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। সুফিয়ানকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সকালেই মৌলভীবাজারের আদালতে পাঠানো হয়ে গেছে।