মুজাহিদ হোসেন, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি:
ভুয়া কাবিননামা দেখিয়ে স্ত্রী বলে দাবি করে তরুণীকে উঠিয়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে এক তরুণীর দায়ের করা মামলায় কাজীসহ কথিত বরকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার নওগাঁর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত—১—এ হাজির হয়ে জামিন চাইলে জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক ইমতিয়াজুল ইসলাম। কারাগারে পাঠানো ওই দুই ব্যক্তি হলেন, নওগাঁ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিয়ে নিবন্ধনকারী কাজী রফিকুল ইসলাম ও নওগাঁর মান্দা উপজেলার বৈলশিং গ্রামের বাসিন্দা মাহমুদুননবী বেলাল।
আদালত সূত্রে জানা যায়, মামলায় অভিযুক্ত বিয়ে নিবন্ধনকারী কাজী রফিকুল ইসলাম ও মাহমুদুননবী বেলাল আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। তাদেরপক্ষে আইনজীবী আতিয়ার রহমান ও সাজেদুর রহমান জামিন শুনানি করেন। বাদীপক্ষে নওগাঁর কোর্ট পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম এই জামিনের বিরোধীতা করেন। শুনানি শেষে নওগাঁর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত—১—এর বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
নওগাঁ সদর মডেল থানায় করা মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী তরুণী (২৬) নওগাঁ শহরের পার—নওগাঁ এলাকার বাসিন্দা। মাহমুদুননবী বেলাল নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ওই তরুণীর বাবাকে সহযোগিতার নামে তার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। বাবার সঙ্গে সখ্যতার সূত্র ধরে বেলাল ওই তরুণীর বাড়িতে মাঝেমাঝে যাতায়াত করতেন। গত ৫ মে ওই তরুণীর বাড়িতে এসে কাজী রফিকুল ইসলামের স্বাক্ষর করা বিয়ে নিবন্ধনের কাবিননামা ও নওগাঁ নোটারি পাবলিকে সম্পন্ন একটি হলফনামা দেখিয়ে বেলাল ওই তরুণীকে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করেন। কিন্তু ওই তরুণী এই বিয়ের কাবিননামা ও হলফনামা ভুয়া বলে দাবি করে তাঁর সঙ্গে যেতে অস্বীকৃতি জানালে বেলাল তার সঙ্গে আসা সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোকজন দিয়ে তাকে নিজের বাড়িতে উঠিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এই ঘটনার পর ওই তরুণী জালজালিয়াতির করে ভুয়া কাবিননামা, নোটারি পাবলিকের হলফনামা তৈরি, প্রতারণা এবং বেআইনীভাবে সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে দণ্ডবিধির ৪০৬, ৪২০, ৪৬৫, ৪৬৮, ৪৭১ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ এনে গত শুক্রবার নওগাঁ সদর মডেল থানায় মামলা করেন।
ভুক্তভোগী ওই তরুণীর বাবা বলেন, তার মেয়ের নামে প্রায় দুই কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। বেলাল এটা জানতে পেরে ওই সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার জন্য ভুয়া কাবিননামা ও হলফনামা দেখিয়ে তার মেয়েকে তার স্ত্রী বলে দাবি করছেন। টাকার লোভে বিয়ে রেজিস্ট্রির কাজীসহ অন্যরা তাকে সহযোগিতা করেছেন।