মুজাহিদ হোসেন, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি:
নওগাঁর পোরশার গাঙ্গুরিয়া ডিগ্রী কলেজের ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের দুই শিক্ষক খোরশেদ আলম ও লোকমান হোসাইনের বিরুদ্ধে নারী শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা কলেজের উপাধ্যক্ষকে মৌখিকভাবে অভিযোগ দেওয়ার পর এক সপ্তাহ পার হলেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করেননি উপাধ্যক্ষ।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, এই দুই শিক্ষক ক্লাশের বাইরে ও ভিতরে বিভিন্ন অজুহাতে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিসহ ছাত্রীদের আপত্তিকর স্থানে হাত দেয়। সেই ঘটনায় রোববার দুপুরে শিক্ষার্থীদের তিনজন অভিভাবক কলেজ চত্বরে অভিযুক্ত শিক্ষক লোকমান হোসাইনের কাছে তাদের শিক্ষার্থীদের সাথে এই ধরনের আচরনের কারন জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক ভাবে তারাও তার পিছু পিছু তাড়া করে বালিয়াচান্দা থেকে তাকে পাকড়াও করে কলেজের উপাধ্যক্ষের কাছে সোপর্দ করে তার বিচার দাবি করলে উপাধ্যক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নিবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, এই দুই শিক্ষকের যৌনহয়রানী মুলক আচরনের কারনে অনেক শিক্ষার্থী এই বিষয়ের ক্লাশ করতে আগ্রহী হয়না।তারা আমাদের পিতৃসমতুল্য। তাদের কাছ থেকে এই ধরনের আচরন কখনোই কাম্য নয়, এর একটা সুষ্ট বিচার হওয়া উচিত। আগেও আমাদের সিনিয়র আপুদের সঙ্গে একই ধরনের ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে কিন্তু কলেজ প্রশাসন সুকৌশলে তা ধামাচাপা দিয়েছিলো, তখন যদি প্রশাসন তা শক্তভাবে দমন করতেন তাহলে পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো না।
এ বিষয়ে অভিভাবকরা বলেন, অনেক দিন থেকে এই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আমাদের কাছে যৌনহয়রানির বিভিন্ন অভিযোগ আসে। একই কর্মকান্ড আবারও গত সপ্তাহে তারা শিক্ষার্থীদের সাথে করেছে। অধ্যক্ষ ছুটিতে থাকার কারনে উপাধ্যক্ষকে বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও কলেজের শিক্ষকগণ এই নেক্কারজনক ঘটনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরোধ করা হয়েছিলেন। কিন্তু তার পর এক সপ্তাহ পার হলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় আমরা বাধ্য হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককের কাছে জানতে চাই। তখন তিনি আমাদের কথা না শুনে চলে যেতে চাইলে আমরা তাকে ধাওয়া করে ধরে উপাধ্যক্ষের কাছে সোপর্দ করেছি। স্যার প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক লোকমান হোসাইনের মুঠোফোনে কল দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায় ও খোরশেদ আলমের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
কলেজের উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম (ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল) বলেন, আমাদের কয়েকজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী আমাকে জানিয়েছে। আমি বিষয়টি দেখবো।
কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফ আদনান বলেন, এই বিষয়ে আমাকে কেউ অভিযোগ দেয়নি বা কেউ কিছু জানাননি। অভিযোগ পাওয়া গেলে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।