20.8 C
Bangladesh
Thursday, November 14, 2024
spot_imgspot_img
Homeঅভিযোগনওগাঁর রাণীনগরে ইটের প্রাচীর দিয়ে সাতমাস ধরে একঘরে চার পরিবার,মেলেনি প্রতিকার

নওগাঁর রাণীনগরে ইটের প্রাচীর দিয়ে সাতমাস ধরে একঘরে চার পরিবার,মেলেনি প্রতিকার

মুজাহিদ হোসেন, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি

নওগাঁ জেলার রাণীনগরে সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে বিরোধের জেরে চারটি পরিবারকে সাত মাস ধরে একঘরে করে রাখার অভিযোগ উঠেছে।এছাড়া ও ইটের প্রাচীর দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে চলাচলের রাস্তা।

উক্ত ঘটনার সুষ্ঠু প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করে তিনমাস অতিবাহিত হলেও প্রতিকার মেলেনি বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগি পরিবারের লোকজন।
ঘটনাটি ঘটেছে রাণীনগর উপজেলার মিরাট ইউনিয়নের বড়খোল গ্রামে।

সেই ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য বড়খোল গ্রামের আকবর দেওয়ানের ছেলে ছামছুর দেওয়ানসহ পরিবারের সদস্যরা জানান, বড়খোল উচ্চ বিদ্যালয়ের সাথে ছামছুর দেওয়ান পরিবারের জায়গার মালিকানা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। গ্রামের মাতব্বর এবং প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন জায়গা ছেড়ে দিয়ে ঘর বাড়ি ভেঙে নিয়ে পাশের খাস জমিতে বসতি স্থাপনের প্রস্তাব দেয়।ওই প্রস্তাব নাকচ করার কারণে গত সাতমাস আগে গ্রামের মাতাব্বর আব্দুল করিম, রিয়াজুল ইসলাম, বেলাল ও প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন তাদের লোকজন নিয়ে ছামছুর দেওয়ানের পরিবারের সদস্য মোমেনা বিবির দোকান ঘর ভেঙে দেয়।

এরপর মাতাব্বররা ছামছুর দেওয়ান, ভাই উজ্জল দেওয়ান, প্রতিবেশি রমজান দেওয়ান এবং মোমেনা বিবিসহ চার পরিবারকে একঘরে করে রাখে। আমরা জায়গার মালিকানা নিয়ে আদালতে মামলা দিয়েছি।

ছামছুর দেওয়ান আরও জানান, মাতাব্বর রিয়াজ দেওয়ান নিজে এসে ছামছুর দেওয়ানসহ চার পরিবারের লোকজনকে এক ঘরে করে রাখার বিষয়টি জানায়।
সমাজের কোন লোকজন ওই চার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলতে, ছামছুর দেওয়ানের ভ্যান গাড়িতে যাতায়াত করতে, দোকান থেকে কোন জিনিস ক্রয় করতে এবং মসজিদে নামাজ পরতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়। গ্রামের কেউ এ নির্দেশনা না মানলে তার এক হাজার টাকা জরিমানা করা হবে বলেও তারা ঘোষণা দেয়।

এমন নির্দেশনার পর থেকে গ্রামের কোন লোকজন তাদের সাথে কথা বলে না এবং দোকান থেকে কোন জিনিসপত্র বা ওষুধও বিক্রি করে না এবং ভ্যান গাড়িতেও কেউ যাতায়াত করে না। এছাড়া বিদ্যালয়ের জায়গা দাবি করে ছামছুর দেওয়ানসহ চার পরিবারের লোকজনের চলা-চলের রাস্তা ইটের প্রাচীর দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে করে বাড়ি থেকে বের হতে হচ্ছে প্রাচীর টপকে। ফলে ২১ জন সদস্য নিয়ে চরম দুর্ভোগে পরেছেন ওই চার পরিবার।

গ্রামের প্রধান মাতাব্বর আব্দুল করিম, রিয়াজ উদ্দীন এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন একঘরে করে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ছামছুর দেওয়ানরা খারাপ মানুষ। যে কারণে গ্রামের কোন লোকজন ওদের সাথে কথা বলে না। এছাড়া ওরা নিজেরাই নিজেদের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করেছে। আমরা বন্ধ করিনি।

ওই গ্রামের শাহিন হোসেন, ইকবাল হোসেন, খায়রুল ইসলাম প্রামানিক জানান, স্কুলের সাথে জায়গা নিয়ে বিরোধ চলছে। কয়েকবার বসেও সমাধান হয়নি তাই মাতাব্বরদের নির্দেশে সমাজ থেকে তাদেরকে একঘরে করে রেখেছে। যে কারণে আমরাও কথা বলি না।

এঘটনার সুষ্ঠু প্রতিকার চেয়ে ছামছুর দেওয়ান নওগাঁ জেলা প্রসাশক বরাবর লিখিত অভিযোগ করলে ২৭ অক্টোবর জেলা প্রসাশক রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ব্যক্তিগতভাবে দেখে অবহিত করার নির্দেশ দেন। এরপর নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আসলেও গত তিনমাসে এর কোন সুষ্ঠু প্রতিকার করেনি বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, জেলা প্রসাশকের নির্দেশে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং উভয় পক্ষকে আমার দফতরে ডেকেছি। আশা করছি তারা আসবেন এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান হবে।একঘরে করে রাখার বিষয়টি সম্পন্ন অমানবিক ও আইন বিরুদ্ধ।

Most Popular

Recent Comments