21.3 C
Bangladesh
Saturday, December 21, 2024
spot_imgspot_img
Homeখেলার মাঠনওগাঁর সাপাহারের জবই বিলে নৌকাবাইচের আনন্দে মাতল হাজারো দর্শক

নওগাঁর সাপাহারের জবই বিলে নৌকাবাইচের আনন্দে মাতল হাজারো দর্শক

মুজাহিদ হোসেন, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ

বিলের দুই পাড়ে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ দেখার জন্য। বৃহস্পতিবার বিকেলে নওগাঁর সাপাহার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জবই বিলে এ নৌকাবাইচ প্রতিযোগীতা হয়। নৌকাবাইচে অংশগ্রহণনারীদের থেমে থেমে হর্ষধ্বনিতে মুখরিত নদীপারের চারপাশ। বইঠার ছলাৎ ছলাৎ শব্দ আর মাঝি-মাল্লাদের কণ্ঠে কোরাস শোনা যায় ‘হেইও রে, হেইও’। একেকটি নৌকা ছুটে চললে হর্ষধ্বনি দিয়ে দলগুলোকে উৎসাহিত করতে থাকেন হাজারো দর্শক। এ সময় পুরো এলাকা আনন্দ মুখর হয়ে ওঠে।

স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে নৌকাবাইচের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। এতে অংশ নেন নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ আশেপাশের ছোট-বড় মিলে প্রায় ৮টি নৌকা।

দেখা যায়, এই নৌকাবাইচ উপভোগ করতে দুপুরের পর থেকেই তীব্র রোদ ও গরম উপেক্ষা করে জবই বিলের উৎসুক মানুষ জড়ো হতে থাকেন। বিকেল সাড়ে ৩টায় জবই বিলের মাহিল প্রান্ত থেকে নৌকাবাইচ শুরু হয়ে মাছ চত্বর এলাকায় শেষ হয়। নৌকাবাইচের দূরত্ব ছিল প্রায় ১ কিলোমিটার। এ সময় বিলের মাঝ দিয়ে চলে যাওয়া রাস্তার দুই পাশে মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল। তাদের আনন্দ-উল্লাসে মুখরিত বিলের চারপাশ। এই নৌকাবাইচ দেখতে দুপুরের আগে থেকে ছেলে থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত বিলের দুই পার্শে ভীড় জমান।

দর্শনার্থীরা বলেন, ফেসবুকের মাধ্যমে নৌকা বাইচ উৎসবের কথা জানতে পেরেছি। সকাল ১১টায় রওনা হয়ে এখানে এসেছি। এখানে এসে খুব ভালো লাগছে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই নৌকা বাইচ এখন বিলুপ্তির পথে। দর্শনার্থীদের মধ্যে কেউ কেউ বলেন, আমার জীবনে প্রথম নৌকা বাইচ দেখতে এসেছি। এখানে এসে নৌকা বাইচ দেখে দারুণ আনন্দ পেয়েছি। প্রতি বছর এমন আয়োজন করার জন্য কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন বলেন, জবই বিল কেন্দ্রীক পর্যটন বিকাশে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতিনিয়ত বহুমুখী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এরই একটি অংশ জবই বিলে নৌকা বাইচ। এই প্রতিযোগীতা আয়োজন করায় আবহমান বাংলার চিরায়ত চিত্র ধরে রাখার পাশাপাশি পর্যটকদের কাছে জবই বিল আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। এতে স্থানীয়দের জীবন জীবিকার পরিবর্তন আসবে।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, আবহমান গ্রাম-বাংলার সংস্কৃতি ধরে রাখতে ও জবই বিলের ইতিহাস ও ঐতিহ্যর অংশ এই নৌকা বাইচ। নৌকাবাইচকে কেন্দ্র করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের মাঝে যেন প্রাণ ফিরে এসেছে। আগামীতেও আরও বড় পরিসরে এই ধরনের আয়োজন করা হবে বলেও জানান তিনি।

Most Popular

Recent Comments