24 C
Bangladesh
Sunday, December 22, 2024
spot_imgspot_img
Homeআইন ও আদালতঅপরাধনওগাঁয় অর্ধগলিত শিশুর লাশ উদ্ধার নিয়ে পুলিশ সুপারের সংবাদ সম্মেলন

নওগাঁয় অর্ধগলিত শিশুর লাশ উদ্ধার নিয়ে পুলিশ সুপারের সংবাদ সম্মেলন

নওগাঁয় অর্ধগলিত শিশুর লাশ উদ্ধার নিয়ে পুলিশ সুপারের সংবাদ সম্মেলন

মুজাহিদ হোসেন,নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি:

নওগাঁর আত্রাইয়ে নিখোঁজের ২১দিন পর ইব্রাহিম (৬) নামে এক শিশুর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এঘটনায় বুলবুল সোনার (৩১) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) ভোর ৫টার দিকে গ্রেফতার বুলবুল সোনারের তথ্যের ভিত্তিতে উপজেলার বিশা ইউনিয়নের শ্রীধরগুরনই গ্রামের পারাপার ঘাটের দক্ষিণ পার্শে থেকে ওই শিশুর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। বৃহষ্পতিবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক এসব কথা জানান। নিহত শিশু ইব্রাহিম উপজেলার শ্রীধরগুড়নই গ্রামের হযরত আলীর ছেলে। গ্রেফতার বুলবুল সোনার একই গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গত ১০ নভেম্বর শিশুটি নিখোঁজ হলে তাকে খুঁজে না পেয়ে তার বাবা থানায় একটি নিখোঁজ ডাইরি করেন। এরপর পুলিশ বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করে। এরই এক পর্যায়ে রাত্রিবেলা জানালা দিয়ে শিশুটির বাবার শয়নকক্ষে একটি চিঠি ফেলে দিয়ে বলা হয় নতুন একটি সিম ও মোবাইল ক্রয় করে শিশুর বাবা যেন বাবুর দোকানের সামনে তুলার মধ্যে রেখে আসে এবং ৬ লক্ষ টাকা রেডি রাখে। এরপর ২৬ তারিখে ১০টার পর থেকে অজ্ঞাত মোবাইল নাম্বার থেকে শিশুটির বাবার মোবাইল ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করলে শিশু ইব্রাহিমের বাবার বক্তব্য, স্থানীয় সোর্স এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত হয় যে একই গ্রামের আব্দুল জলিল সোনারের ছেলে বুলবুল সোনার এসব কান্ডগুলো ঘটাচ্ছে। পরেরদিন বিকেলে থানা পুলিশ বুলবুল সোনারকে আটক করলে শিশুটির বাবা হযরত আলী বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন একটি মামলা দায়ের করে। সেই মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, গ্রেফতারের পর বুলবুল সোনার পুলিশকে জানাই সে একজন মুদি দোকানদার এবং স্থানীয় শ্রীধরগুরনই দাখিল মাদ্রাসার খন্ডকালীন শিক্ষকতা করেন। তার বিভিন্ন জায়গায় ঋণ ছিল। সে সব টাকার জন্য তাকে বারবার চাপ দেয়া হচ্ছিল এই ঋণ থেকে মুক্তি হওয়ার জন্যই সে শিশুর বাবার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা করে। কিন্তু পুলিশের কাছে কথাটি বিশ্বাস না হলে তাকে বিজ্ঞ আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।

তিনি আরো বলেন, রিমান্ডে থাকা অবস্থায় জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করে শিশুটি গত ১০ তারিখ দুপুরে তার দোকানে গিয়ে পাঁচ-ছয়টি বেলুন ফাটায়। সে শিশু ইব্রাহিমকে দোকান থেকে চলে যেতে বলল সে চলে না গিয়ে আরও বেলুন চাইলে বুলবুল রাগ করে শিশুটিকে গলা টিপে হত্যা করে চা স্টলে পিছনে ছাইয়ের স্তুপের মধ্যে বস্তা বন্দী করে পুতে রাখে। পরবর্তীতে ১৮ তারিখে বালতিতে করে শিশুটির অর্ধ গলিত লাশ পাশে আত্রাই নদীর ভিতরে পুঁতে রেখে একটি বড় কংক্রিটের ক্লাব দিয়ে চাপা দিয়ে রাখে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এলাকার লোকজনের উপস্থিতিতে বুলবুলের দেখানো স্থান থেকে শিশুটির অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ আসামিকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীর জন্য বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করবে বলেও জানানো হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান, সদর সার্কেল রাকিবুল হাসান ইবনে রহমান, আত্রাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারেকুর রহমান সরকারসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

Most Popular

Recent Comments