মুজাহিদ হোসেন, জেলা প্রতিনিধি নওগাঁঃ
সময়ের সাথে পাল্টে গেছে জীবন যাত্রার মান।পাল্টে গেছে মানুষের রুচিবোধ। এই তো ক বছর আগে খোলা আকাশের নীচে
পিড়ি বা টুলে বসে চুল-দাড়ি কেটেছে সকল পেশার মানুষ।
বর্তমানে তেমন আর চোখে পড়ে না এই সব নরসুন্দরদের। বয়সের ভারে অনেকে ছেড়ে দিয়েছেন এ পেশা বা আধুনিক যুগে আধুনিকতার ছোঁয়ায় সাজানো সেলুন গুলোর জন্য অনেকটাই কমে গেছে পিড়ি টুলে বসে চুল কাটার কদর। তবু এখনো চোখে পড়ে বাপ দাদার আমলের পিড়ি টুলে বসে দাড়ি চুল কাটার ঐতিহ্য।
নওগাঁর আত্রাই উপজেলা ঐতিহ্যবাহি আত্রাই নদী আর নদীর একটু পাশে ঐতিহ্যবাহি আহসানগঞ্জ হাট সহ এলাকার বেশ কিছু হাট বাজারে বাপ-দাদার পেশাকে আজও আকড়ে ধরে রেখেছেন নর সুন্দররা। সব শ্রেণী-পেশার মানুষ অন্যের কাছে নিজেকে সুন্দর রুপে উপস্থাপন করতে ব্যস্ত। মানুষকে চুল-দাড়ি কেটে দেখতে সুন্দর করা যাদের কাজ তারাই নর সুন্দর। আঞ্চলিক ভাষায় তাদের বলা হয় শীল বা নাপিত।
আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে হাটে-বাজারের ফুটপাতে পিড়ি বা টুলে বসা এই সেলুনগুলো।
বর্তমান সময়ে বড় বড় মার্কেটে ঘর সাজিয়ে এমন কি শিতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে নর সুন্দররা মানুষের চুল কাটার কাজ করছেন। মানুষের সৌন্দর্যের অন্যতম উপকরণ চুল। আর এই চুল নিয়ে যুগে যুগে মানুষের ভাবনার অন্তঃ নেই। সেই কারণে নাপিতদের কদর ও প্রয়োজনীয়তা আজও ফুরিয়ে যায়নি। এক সময় হাট-বাজারের ফুটপাতে পিড়ি,টুলে বসে চুল দাড়ি কাটত মানুষ।
কিন্তুু কালের বিবর্তনে আধুনিকতার ছোঁয়ায় মানুষের চুল দাড়ি কাটার আদিপরিচিত দৃশ্য এখন অনেকটা কমে গেলেও এখনও উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে চোখে পড়ে সেই দৃশ্য। তবে আধুনিক সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের ফলে আজ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের গতি ধারায় এসেছে পরিবর্তন। লেগেছে নতুনত্বের ছোঁয়া। হারিয়ে যেতে বসেছে হাটে-বাজারে বসা হাতুড়ে সেলুন।
উপজেলার সিংসাড়া গ্রামের নিতাই চন্দ্র শীল এখনো আত্রাইয়ের বিভিন্ন হাটে বাজারে ফুটপাতে বসে চুল-দাড়ি কাটা অব্যহত রেখে পুরাতন ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন।
উপজেলার ভবানীপুর/মির্জাপুর গ্রামের বয়োবৃদ্ধ নরসুন্দর শ্রী বিমল চন্দ্র শীল বলেন, বাংলা ১৪৬১ সন থেকে দু পয়সা সেভ ও তিন পয়সা চুল কাটা শুরু করেছি।
বর্তমানে সেভ ২০/৩০ টাকা ও চুল কাটা ৩০/৫০ টাকা। এটা আমার বাপ-দাদারা করে গেছে তাই এ পেশা আমি ধরে রেখেছি, বাপের ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য। আধুনিক ছোঁয়া না লাগলেও বাপ-দাদার আমলের সেই স্মৃতি ধরে রেখেছেন উপজেলার সমসপাড়া এলাকার কয়েক জন নরসুন্দর বা নাপিত।