মুজাহিদ হোসেন, জেলা প্রতিনিধি নওগাঁ:-
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার কোলা হাটে কৃষকদের নিকট থেকে প্রতিমনে ২ কেজি করে অতিরিক্ত (ধলতা) নিয়ে রশিদ ছাড়ায় খাস আদায়ের অভিযোগ তুলেছেন এলাকার কৃষকরা। ১৪২৬ বঙ্গাব্দে কোলা হটের ইজারাদার মোঃ ফেরদৌস সরদার কোলা হাটে স্থান সংকুলান না হওয়ায় স্থান বরাদ্দের জন্য ১৩/১২/২০১৯ ইং তারিখে বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাঃ আবু তাহিরের নিকট আবেদন করেন। কোন প্রতিকার না পেয়ে পুনরায় ০৫/০১/২০২০ ইং তারিখে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসক নওগাঁর নিকট আবেদন করেন। কোন সুফল না পেয়ে ১৪২৭ বঙ্গাব্দের টেন্ডার প্রক্রিয়া স্থগিতাদেশ চেয়ে হাইকোর্টে ১২৯৭/২০২০ নং রীট পিটিশন মামলা দায়ের করলে মহামান্য হাইকোর্ট ০৩/০২/২০২০ ইং তারিখে টেন্ডার প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম, হাইকোর্ট বিভাগ (বিচার শাখা) বিজ্ঞপ্তি নং ১৫ তারিখ ১১ এপ্রিল ২০২০ ২৭৫০ নং স্মারকের ধারাবাহিকতায় পুনরায় উল্লেখ করেন যে সকল ফৌজদারী মামলার আসামিদের নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত জামিন প্রদান করা হয়েছে বা যে সকল মামলার নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা/ স্থিতিবস্থা/ স্থগিতাদেশ প্রদান করেছেন, সে সকল মামলার কার্যকারিতা উচ্চ আদালত পুর্নারূপে খোলার তারিখ পর্যন্ত বর্ধিত হয়েছে মর্মে গণ্য হবে। স্থগিতাদেশের পর হতে কোলা হাটটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক লোক নিয়োগ করে তাদের মাধ্যমে খাস আদায় করে। গত ০২/৭/২১ শুক্রবার থেকে উপজেলা পরিষদের চেয়াম্যান সামছুল আলম খাঁনের প্রচেষ্টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলপনা ইয়াসমিন আওয়ামীলীগের কতিপয় ব্যক্তিদের মাধ্যমে কোলা হাটটি খাস আদায় করছেন বলে উপজেলা চেয়ারম্যান শামসুল আলমের ভাষ্যে জানা যায়। ০৬/০৮/২০২১ ইং তারিখ সরেজমিনে কোলা হাটে গিয়ে মা ট্রেডার্স , মেসার্স ছালাম ট্রেডার্স, মের্সাস মাহিয়া ট্রেডার্স সহ অন্যান্য ক্রেতারা কৃষকদের নিকট থেকে পটল, বেগুন, কাঁচা মরিচসহ অন্যান্য সবজি প্রতিমনে ২ কেজি ধলতা অর্থাৎ ৪২ কেজিতে মন হিসেবে ক্রয় করার পাশাপাশি মন প্রতি ২০ টাকা করে খাজনা কেটে রেখে রশিদ না দিয়ে কৃষকদের মূল্য পরিশোধ করছেন বলে সোহেল রানা, মোঃ হিরনসহ অর্ধশতাধিক কৃষকরা জানান। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অতি কষ্ট এবং অর্থ ব্যয় করে ফসল উৎপাদন করে মনপ্রতি ২ কেজি করে ধলতা বা ৪২ কেজি মন ও মন প্রতি ২০ টাকা খাজনা দিতে হচ্ছে। এতে যে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এ অবস্থা দেখা ও প্রতিকার করার কেউ নেই বলেও তারা জানান। কাঁচা মরিচ বিক্রেতা কতিপয় কৃষকরা বলে ২ কেজি করে অতিরিক্ত (ধলতা) বা ৪২ কেজিতে মন হিসেবে এবং প্রতি কেজিতে ১ (এক) টাকা করে খাজনা কেটে রেখে তাদের মরিচের মূল্য ক্রেতারা তাদের পরিশোধ করলেও খাজনার রশিদ তাদেরকে দেওয়া হয় না এ কেমন অবিচার। এমন অবিচারের প্রতিকার হবে এ প্রশ্ন তারা এই প্রতিনিধিকে বলেন। অপর দিকে মা ট্রেডাসের প্রোঃ মোঃ আলমগীর হোসেন বাবু , মেসার্স ছালাম ট্রেডার্স এর প্রোঃ মোঃ বিপ্লব হোসেন মেসার্স মাহিয়া ট্রেডাসের প্রোঃ মোঃ মিলন হোসেন, মেসার্স মায়ের দোয়া ভান্ডার এর প্রোঃ মোঃ আজম সহ অন্যান্য ক্রয়কারীরা জানান তারাও ১০৫ কেজির বস্তা প্রতি ৫০ টাকা করে রশিদ ছাড়াই খাজনা দিয়ে থাকেন এবং বিক্রেতাদের নিকট মন প্রতি ১৫/২০ টাকা করে কেটে রাখা খাজনার টাকা আদায়কারীরা রশিদ না দিয়ে নিয়ে থাকেন । প্রতি মনে ২ কেজি করে ধলতা কেন আপনারা নেন এ প্রশ্ন করলে তারা বলেন ধলতা নেওয়ার নিয়ম সর্বত্রই রয়েছে তাই তারাও নেয়। খাস আদায়কারী সামছুল আলম (ইট ভাটা মালিক) এবং শ্রীঃঅর্জুন এর সঙ্গে উপরোল্লিখিত বিষয়ে কথা বললে তারা বিক্রেতা ও ক্রেতাদের রশিদ দেন বলে জানিয়েছেন, মনে ২ কেজি ধলতা বা ৪২ কেজিতে মন পুর্ব থেকে এই নিয়মে ১/২ কেজি করে ধলতা নেওয়া হয়ে থাকে তাই এই নিয়ম রয়েছে। খাস আদায়ের সময় সরকারি লোক থাকার কথা , তারা কেন থাকেন না প্রশ্ন করলে তারা বলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলপনা ইয়াসমিন তাদের যেভাবে বলেছেন তারা সেইভাবে আদায় করে তাঁকে টাকা জমা দেন।
উপরোক্ত বিয়য়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলপনা ইয়াসমিনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি উক্ত হাটের খাজনা আদায়কারীদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান তিনি।