মুজাহিদ হোসেন, জেলা প্রতিনিধি নওগাঁ
নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান মিতুর বিরুদ্ধে নজিপুর পৌর পার্কের সরকারি গাছ কর্তনের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে নজিপুর পৌর পার্কের সরকারি গাছ কোন প্রকার টেন্ডার ছাড়াই কেটে নিয়ে যায় ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান মিতুর লোকজন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি বলেন, গাছ গুলো কাউন্সিলরের লোকজন কেটেছেন,কেন কাটছেন এমন প্রশ্নে তারা বলেন,রাস্তায় লাইনের জন্য খুঁটি প্রয়োজন যার কারণে এই গাছ গুলো কাটা হচ্ছে।
স্থানীয় যুবক সুজন কুমার বলেন ২০ -২২ টি গাছ কেটেছে যে গুলো দিয়ে এ-ই ওর্য়াডের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি হিসাবে ব্যবহার করেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নজিপুর পৌর পার্কে প্রায় অর্ধশতাধিক গাছ কর্তন করা হয়েছে। গাছ কাটার পরে গাছের মূল তুলে ফেলা হয়েছে আবার কোথাও কোথাও মূলগুলি বালি দিয়ে ঢেকে বা চাপা দেওয়া হয়েছে যাতে কেউ না চিনতে পারে। আবার কিছু গাছ কেটে কেটে ফেলে রাখা হয়েছে।
পৌর কাউন্সিলর মিজানুর রহমান মিতু গাছ কাটার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন,৪৫ টা গাছ কাটা হয়েছে যেগুলো তিনি বিক্রি ও করেন নি বা ব্যক্তিগত কাজেও ব্যবহার করেন নি, এই গাছগুলো তিনি ওয়ার্ড এলাকায় ওয়ার্ডবাসির স্বার্থে বিদ্যুতের ল্যাম্পপোষ্ট বা খুঁটির কাজে লাগিয়েছেন। তিনি আরো বলেন গাছ কাটার আগে মেয়র মহোদয়কে মৌখিকভাবে জানালে তিনি তাকে মৌখিক অনুমতি দিয়েছেন। তবে কোন টেন্ডার হয়নি। নদীর ধারে যেগুলো নদী গর্ভে বিলিয়নের পথে এমন গাছ গুলোই কর্তন করা হয়েছে।
পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রীন ভয়েসের মুখপাত্র আলমঙ্গীর হোসেন বলেন একটা গাছ কাটা মানে একটি প্রান হত্যার সামিল। তিনি এর সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কমিটি পত্নীতলার সভাপতি সুমন কুমার শীল বলেন,গাছ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। পৌর পার্কের এ-ই গাছগুলোর শীতল ছায়ায় দর্শনাথীরা প্রাণ জুড়ায়। তিনি এ-র সুষ্ঠ তদন্ত দাবি করেন ।
নজিপুর পৌর মেয়র রেজাউল কবীর চৌধুরী জানান, গাছ কাটার বিষয়ে পৌরসভা থেকে কোন টেন্ডার দেওয়া হয়নি, তিনি আগে কিছু জানতেন না, পরে লোকমুখে ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে জানতে পারেন । খাস জমির গাছ সরকারী অনুমতি ছাড়া কাটার কোন এখতিয়ার কারো নেই ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা( ইউএনও) লিটন সরকার বলেন, বিষয়টি জানার সাথে সাথে নায়েব কে তদন্তের জন্য বলা হয়েছে , গাছগুলো সরকারি জায়গায় হয়ে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।