জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, কুয়াকাটা- কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:-
পরিবেশের ভারসাম্য ও সামুদ্রিক জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় বন্ধ হোক ডলফিন হত্যা এই শ্লোগানে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) সকাল ১১ টায় কলাপাড়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ডলফিন রক্ষা কমিটি- কুয়াকাটা নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডলফিন রক্ষা কমিটি-কুয়াকাটা’র টিম লিডার রুমান ইমতিয়াজ তুষার, সদস্য আবুল হোসেন রাজু, কেএম বাচ্চু,আসাদুজ্জামান মিরাজসহ অনেকে। আরো উপস্থিত ছিলেন ইকোফিশ-২ প্রকল্পের পটুয়াখালী জেলার সহকারী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি।
লিখিত বক্তব্যে টিম লিডার রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, অত্যান্ত দু:খের সাথে জানাচ্ছি দেশে যখন জীব বৈচিত্র
রক্ষায় সরকারী-বেসরকারী ভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে ঠিক তখনি একের
পর এক কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসছে সামুদ্রিক বন্ধু প্রাণি ডলফিন।
প্রতি নিয়ত সমুদ্রের এই রঙ্গরস ও নৃত্যরত ডলফিনের মৃত্যতে আমরা র্মমাহত।
তিনি আরো বলেন
দিনে দিনে এভাবে ডলফিন মৃতের কারণে একদিকে যেমন সামুদ্রিক পরিবেশের চরম ক্ষতি হচ্ছে তেমনি আমাদের নিষ্ঠুরতার প্রমানও হচ্ছে।
চলতি বছরের এই র্বষা শৌসুমে কুয়াকাটার ১৮ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকতে পর পর ৬টি ডলফিনের মৃত্য আমাদের ব্যথিত করেছে। এমনি ভাবে প্রতি বছর অন্তত ১০ থেকে ১২টি ডলফিনের মৃত্যু ঘটে।
আপনারা জানেন বিশ্বের বিভিন্ন নদী সমুদ্রে প্রায় ৪০ প্রজাতির ডলফিন
রয়েছে। যা সামুদ্রিক সকল জীব বৈচিত্রের মধ্যে অনেকটা ব্যাতিক্রম প্রাণী।
সমুদ্র ভ্রমন বা মৎস্য শিকারে বের হলে বিভিন্ন সময় দেখা যায় ডলফিনের দল
নৌকা বা ট্রলারের আশে পাশে এসে ঢেউয়ের সাথে নৃত্য করে। আসলে এরা মানুষের সাথে একটা বন্ধুত্ব সম্পর্কের নিদর্শন বোঝাতে চায়। সমুদ্রে বিপদে পড়া যে কোন প্রাণীর পাশে উপকারী প্রাণী হিসেবেই এসব ডলফিনদের দেখা যায়।
তিনি বলেন, কুয়াকাটা ডলফিন রক্ষা কমিটি গত কয়েক বছরের ডলফিন মারা যাওয়ার বিষয় খোজ নিতে গিয়ে জানা গেছে বেশ কয়েকটি কারনে এসব বন্ধু প্রাণীগুলো মারা যাচ্ছে।
তার মধ্যে অন্যতম কিছু কারণ চিন্হিত করেন তারা যার মধ্যে সমুদ্রগামী জেলেদের সামুদ্রিক বন্ধু প্রাণী ডলফিন সম্বন্ধে ব্যাপক ধারনা না থাকা, সমুদ্রে ফেলে রাখা হাজার হাজার জালের বহরে নৃত্যরত ডলফিন আটকে গেলে, তাদের ছাড়াতে গিয়ে মেরে ফেলা,সমুদ্র ও সমুদ্র উপকূলে জেলেদের ফেলা টুকরা জালে ছুটাছুটি করা ডলফিন ফেসে মারা যাওয়া, সমুদ্রের মাটি ঘেসে হাজারী বা নাঙলা বড়শিতে ফেসে মারা যাওয়া, বিভিন্ন সময় সমদ্রগামী জেলেদের কাছ থেকে আমরা এসব তথ্য পেয়েছি।
লিখিত বক্তব্যে কিছু করনীয় প্রস্তাব ও উল্লেখ করা হয় যার মধ্যে ছিল সকল জেলেদের প্রশিক্ষনের মাধ্যমে সামুদ্রিক বন্ধু প্রাণী ডলফিন সর্ম্পকে ধারণা দেয়া, কোনো ভাবে জালে আটকে গেলে অতি যত্নে তাদের ছাড়িয়ে দেয়া, মাছ শিকার করতে গিয়ে কোন ভাবে তাদের আঘাত না করে সে খেয়াল রাখা, প্লাস্টিক, পলি ও টুকরা জাল কোনো ভাবে সমুদ্রে না ফেলা, হাজারী বা নাঙলা জাল ব্যবহারের ক্ষেত্রে আইনের ব্যবহার নিশ্চিত করা, জীব বৈচিত্র রক্ষায় সবাই সচেতন হওয়া।
প্রকৃতি প্রেম ও সকলের সচেতনতার মাধ্যমে রক্ষা পাবে এই সামুদ্রিক বন্ধু প্রানীটি বলে দাবি তাদের।