এস মন্ডল ফুলবাড়ী(দিনাজপুর)থেকে;
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে নানা কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে শুক্রবার পালিত হয়েছে ১৬তম ফুলবাড়ী ট্রাজেডি দিবস।
আজ সকাল থেকেই ছোট-বড় সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে এবং কালোব্যাচ ধারন, শোক র্যালী, শহীদ স্মৃতি সৌধে পুষ্পার্ঘ অর্পন ও আলোচনাসভার মধ্য ১৬তম ফুলবাড়ী ট্রাজেডি দিবস পালিত।
সকাল সাড়ে ৮টায় সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের ব্যানারে ফুলবাড়ীবাসী, তেল গ্যাস বিদ্যুৎ বন্দও রক্ষার জাতীয় কমিটি,ফুলবাড়ী পৌর মেয়রের নেতৃত্বে শোক র্যালী বের করা হয়।
র্যালী গুলো শহরের ঢাকা মোড় হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ স্মৃতিস্তমে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ বেদীতে পুস্পার্ঘ অর্পন ও শপথবাক্য পাঠ করানো হয়। শপথবাক্য আন্দোলনের নেতা ও ফুলবাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র মুরতুজা সরকার মানিক। ।
অপরদিকে তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতাকর্মীরা শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলী ও পরে সেখানে একটি প্রতিবাদী সভা অনুষ্ঠিত। প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ববÍব্য রাখেন জাতীয় কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস, বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য মোশাররফ হোসেন নান্নু প্রমূখ
উল্লেখ্য যে, ২০০৬ সালের ২৬ আগষ্ট উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা খনি প্রকল্প বাতিল, জাতীয় সম্পদ রা এবং বিদেশী কোম্পানী এশিয়া এনার্জীকে ফুলবাড়ী থেকে প্রত্যাহারের দাবীতে সকাল থেকেই ফুলবাড়ীর ঢাকা মোড়ে ফুলবাড়ী, বিরামপুর, নবাবগঞ্জ ও পার্বতীপুর উপজেলার হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হতে থাকে। দুপুর ২টার দিকে তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রা জাতীয় কমিটি ও ফুলবাড়ী রা কমিটির নেতৃত্বে বিশাল প্রতিবাদ মিছিল নিমতলা মোড়ের দিকে এগুতে থাকলে প্রথমে পুলিশ বাধা প্রদান করে। পুলিশের বাধা পেয়ে বিশাল মিছিলটি পুলিশ-বিডিআর-এর বেড়িকেট ভেঙ্গে মিছিলটি এগুতে থাকলে আন্দোলনকারীদের উপর টিয়ার সেল, রাবার বুলেট ও নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করা হয়। বিডিআরের গুলিতে এসময় নিহত হয় আল আমিন, সালেকীন ও তরিকুল। আহত হয় ২ শতাধিক আন্দোলনকারী জনতা। এরপর ফুলবাড়ীবাসী ধর্মঘটের মাধ্যমে এলাকায় অচলাবস্থা সৃষ্টি করে। বাধ্য হয়ে তৎকালীন সরকার ফুলবাড়ীবাসীর সাথে এশিয়া এনার্জিকে দেশ থেকে বহিস্কার, দেশের কোথাও উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করা যাবে নাসহ ৬ দফা চুক্তি করলে এলাকাবাসী ধর্মঘট প্রত্যাহার করে।