আবুল হোসেন রাজু,
কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।
প্রতিবন্ধী-অসহায়-বন্যা দুর্গত ও নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্তদের ভাতার নামে আওয়ামীলীগ নেতা, ইউপি সদস্য, সাংবাদিক ও তার নিজস্ব লোকদের টাকা দিতেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান মহিব।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (সেবা) অসীম চন্দ্র বনিকের স্বাক্ষরিত গত ৯জুন ২০২৪ তারিখে একটি প্রজ্ঞাপনে দেখা যায় ১২৩জন ব্যক্তির অনুকূলে তাদের প্রত্যেককে ৫-১০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। যার সর্বমোট টাকার পরিমাণ সাত লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা।
১২৩জনের তালিকায় রয়েছে কুয়াকাটা পৌর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের কার্যকরী সদস্য অনন্ত মুখার্জি, পৌর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হোটেল ওয়ান স্টারের মালিক মাহবুব আকন, প্রতিমন্ত্রীর স্থানীয় প্রতিনিধি (জমাদার) মহিবুল্লাহ পাটোয়ারী, ধুলাসার ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহ আলম, মহিপুর থানা শ্রমিক লীগের সভাপতি কালাম ফরাজি,অহিদুল ইসলাম ওয়াহিদ খান রাজ(ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাবেক উপ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক),ধুলাসার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোদাচ্ছের হাওলাদার, কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তোফায়েল আহমেদ তপু,আলীপুর মৎস্য আড়তদার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ফকির,দিলিপ কুমার দাস,(রাঙ্গাবালী উপজেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক),
এনামুল ইসলাম(রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি),
মাহমুদ হাসান টিটু,(রাঙ্গাবালী উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি)-সহ তালিকায় বেশীরভাগ ব্যক্তিই সুস্থ, সচ্ছল ও প্রভাবশালী আওয়ামিলীগ নেতা।
প্রতিমন্ত্রীর স্থানীয় প্রতিনিধি (জমাদার) মহিবুল্লাহ পাটোয়ারী জানান, প্রতিমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে তার নেতাকর্মীদের নামে খামে করো টাকা পাঠাতেন। সেভাবে আমিও অনেক সময় পেয়েছি। তবে এই নাম কীভাবে যুক্ত করা হয়েছে বা কে দিয়েছে সেটা আমার জানা নেই। আর আমি কোন টাকা-পয়সাও পাইনি।
বিশিষ্ট সমাজকর্মী ও ফী সাবীলিল্লাহ ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান মিছবাহ বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ তাকে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে পেয়ে আশায় বুক বেঁধেছিল। কিন্তু প্রতিবন্ধী ভাতা সুস্থ ও দলের মানুষদের দিয়ে তার প্রতি ঘৃণা বাড়িয়েছে। এটা আমার এলাকার জন্য চরম লজ্জার।
এ বিষয় কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, এটা সাবেক প্রতিমন্ত্রীর স্বেচ্ছাধীন তহবিল থেকে এসেছে। কে পাবে আর পাবে না সেটা নির্ধারণ করার দায়িত্ব তার। সরকারি টাকা আমার মাধ্যম হয়ে এই টাকা ইতোমধ্যে বিতরণ হয়ে গেছে এবং তালিকায় থাকা সবাই টাকা গ্রহণও করেছে।