জাহিদ শিকদার, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীতে শিক্ষার্থীর উপর হামলার ঘটনায় জড়িত না থেকেও বহিষ্কার হোন আব্দুল করিম মৃধা কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আরিফ বিল্লাহ। কেন্দ্রীয় ছাত্রদল এ বহিষ্কারাদেষ দেওয়ার পরই পটুয়াখালী শহর জুড়ে তৃনমুল ছাত্রদলের কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আর এঘটনায় জড়িত নয় বলে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন তিনি। এছাড়া গত ১৭ ফেব্রুয়ারী ইব্রাহিম খলিলের বাবা বাদি হয়ে পটুয়াখালী সদর থানায় ৯ জনের নাম ও অজ্ঞাত ১০/১৫ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন। যে মামলায় আরিফ বিল্লাহ আসামি নয়।জানাগেছে, গত ১১ ফেব্রুয়ারী রাত ৯টার সময় সবুজবাগ ৬ নং মোড় থেকে পটুয়াখালী ভকেশনাল স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইব্রাহিম খলিলকে বেশ কিছু সন্ত্রাসী বনানী এলাকায় তুলে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় ইব্রাহিম খলিলকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন এবং সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। এঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৩ ফেব্রুয়ারী কেন্দ্রীয় ছাত্রদল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পটুয়াখালী আব্দুল করিম মৃধা কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আরিফ বিল্লাহ, পটুয়াখালী পলিটেকনিক কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক অমি প্যাদা এবং পটুয়াখালী সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক মেহেদী হাসান রাকিবকে বহিষ্কার করে। কিন্তুু যখন ইব্রাহিম খলিলকে মারধর করা হয় তখন আরিফ বিল্লাহ শহরের সোনালী ব্যাংক মোড় এলাকায় একটি চায়ের দোকানে গোয়েন্দা সংস্থার এক সদস্যের সাথে চা খাচ্ছিলেন। যা পৌরসভার সিসিটিভির ফুটেজ দেখে নিশ্চিত হয়। আর যেখানে ইব্রাহিম খলিলের উপর হামলা হয় সেখান থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে অবস্থান করেছিলো আরিফ বিল্লাহ। তাই উচ্চতর তদন্ত না করেই আরিফ বিল্লাহকে বহিষ্কার করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় ছাত্রদলের কর্মীরা।জানাগেছে, ২০২৩ সালের ২১ অক্টোবর পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মেহেদী হাসান শামীম চৌধুরী ও সদস্য সচিব জাকারিয়া আহমেদ আব্দুল করিম মৃধা কলেজ শাখার ১৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেন। যেখানে আরিফ বিল্লাহকে সভাপতি ও ইমরান তালুকদারকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। আর কমিটি ঘোষণার আগে থেকেই ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়ে সক্রিয় ভাবে কাজ করেছিলেন আরিফ বিল্লাহ। সৈরাচারী হাসিনা পতন আন্দোলনের সময় মাঠে থেকে নেতৃত্ব দিয়েন তিনি। তাই তৃনমুল ছাত্রদলের কর্মীরা বলেন, আরিফ বিল্লাহ শিক্ষার্থী ইব্রাহিম খলিলকে মারধরের ঘটনায় কোনভাবে জড়িত না। ছাত্রদলের নিবেদিত কর্মী আরিফ বিল্লাহ। মূলত তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। তাই অধিকতর তদন্তের মাধ্যমে সত্য তুলে ধরার আহবান জানান কর্মীরা। এছাড়া আরিফ বিল্লাহর পদ পুনঃবিবেচনার মাধ্যমে ফিরিয়ে দেয়ার আহবান জানায় তারা।আরিফ বিল্লাহ জানান, ১১ তারিখ রাতে যখন ইব্রাহিম খলিলের উপর হামলা হয় তখন আমি বনানী মোড়ে ছিলাম না। আর হামলার আগে পটুয়াখালী সরকারি কলেজের সামনে থেকে মোটরসাইকেলে সোনালী ব্যাংকের সামনে গিয়ে এক গোয়েন্দা সংস্থার লোকের সাথে চা খাচ্ছিলাম। যা পৌরসভার সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট দেখতে পাবেন। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের প্রতি সম্মান রেখেই বলতে চাই আপনারা সঠিকভাবে তদন্ত করে যদি ঐ ঘটনার সাথে আমার সংশ্লিষ্টতা পায় তবে সকল শাস্তি মাথা পেতে নিবো।পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব জাকারিয়া আহমেদ বলেন, আরিফ বিল্লাহ একজন সাংগঠনিক এবং দায়িত্বশীল ছেলে। আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে। আসলে কেন্দ্র যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা আমাদের সবাইকে মানতে হবে। এমনকি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ চাইলে অধিকতর তদন্ত করে পদ পুনঃবিবেচনাও করতে পারে।এবিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম জানান, অধিক তদন্তের মাধ্যমে যদি তারা নির্দোষ প্রমাণিত হয় তবে তাদের পদ পুনঃবিবেচনা করা হবে পারে।