মোঃ মিঠুন সেখ মিঠু, স্টাফ রিপোর্টার:
পবিত্র ঈদুল ফিতরের বাকি আর মাত্র কয়েকদিন।কঠোর লকডাউন এরই মধ্যে রমজান ও ঈদের শপিং করতে মানুষের ঢল নেমেছে শহরে পাশাপাশি বিভিন্ন উপজেলায়। ভিড়ের মধ্যে দোকানে দোকানে ঘুরে শপিং করছেন ক্রেতারা। তবে তাদের দেখে কারও মনে হবে না, বর্তমান সময়টি করোনা মহামারির। করোনার সংক্রমণ থেকে বাঁচতে এবং সুস্থ থাকতে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব একেবারেই উপেক্ষিত।
পুরো চিত্র দেখে মনে হয়, করোনার ভয়াবহতা থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে শহর বাসী।
এমন পরিস্থিতিতে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এরকম জনসমাগম হলে করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়বে।
শনিবার (১ মে) সকালে পাবনা শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অসংখ্য মানুষের ভিড় রয়েছে বিভিন্ন দোকান, মার্কেটে। ফুটপাতে রয়েছে হকারদের হাঁকডাক।পথচারীদের চলতি পথে ধাক্কা লাগছে একে অপরের সঙ্গে। জনসাধারণকে ভিড়ের মধ্যে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে পোশাক, জুতাসহ নানা জিনিসের দরদাম করতে দেখা গেছে।
বেশ কয়েকটি মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, মার্কেটের প্রায় প্রতিটি গলিই লোকে লোকারণ্য। বলতে গেলে তিল পরিমাণ জায়গা নেই সেখানে। কেউ দিচ্ছেন পোশাক ট্রায়াল আবার কেউ করছেন দাম।
অনেককে কোলের শিশুসন্তানকে নিয়ে মার্কেটে আসতে দেখা যায়। বেশিরভাগ ক্রেতার মুখে ছিল না মাস্ক। মার্কেট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকেও স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে নেওয়া হয়নি তেমন কোনো ব্যবস্থা।
পাবনা শহর মানুষের ঢল নামলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বা স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করতে দেখা গেছে অহরহ। চিহ্ন দিয়ে দোকানীরা দূরত্ব রক্ষার অনুরোধ করলেও অধিক মানুষ জড়ো হওয়ায় তাদের উদ্দেশ্য ভেস্তে যায়।
শহরে শুধু মার্কেট বাদে অন্যান্য সব জায়গায় বেশকিছু উপেক্ষিত ছিল স্বাস্থ্যবিধি।
ক্রেতারা জানান, দীর্ঘ সময় শপিং করতে না পারায় আসতে বাধ্য হয়েছেন । তবে করোনা সংক্রমণ নিয়ে ভয়ে আছেন তারা।
লিটন শেখ নামে একজন বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে পরিবারের জন্য শপিংয়ে এসেছি। তবে করোনার এই সময়ে এরকম ভিড় হবে, এটা ভাবতে পারিনি। আজকের যে অবস্থা, তাতে করোনার সংক্রমণ নিয়ে নিজেই ভয়ে আছি।’
ব্যবসায়ী মো. মিলন হোসেন বলেন, ‘ঈদের মৌসুম হলেও খুব একটা বেচাবিক্রি নেই। হাজারও মানুষ দেখে যেমনটা মনে হচ্ছে, আসল চিত্র তেমনটা না।’
তিনি আরও বলেন, ‘করোনার সময়েও কাস্টমার কাপড় ট্রায়াল করতে চায়। তাদের না বলার সুযোগ নেই। কারণ আমি না করলেও পাশের দোকানে হয়তো সেই সুযোগটা পাবেন। এতে করে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আমরা নিজেরাই আছি।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী নেতৃত্বে সরকারি নির্দেশনা মানার নির্দেশ দিতে দেখা যায়। একজন পুলিশ বলেন, প্রধানমন্ত্রী সবাইকে মাস্ক পরতে নির্দেশনা দিয়েছেন। শুরু থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও পুলিশ বাহিনী বিষয়টির দিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আসছে। কিন্তু এসবের কিছুই তোয়াক্কা করছেন না বেশিরভাগ মানুষ। যার যেমন ইচ্ছা তেমন নীতিতেই চলছে তারা।
মাস্ক না পরে ও স্বাস্থ্যবিধি না মেনে মার্কেট চললে তার খেসারত দিতে হবে সবাইকে।