ফেনী প্রতিনিধিঃ
ফেনী শহরের সুফি ছদর উদ্দিন সড়কে (নাজির রোড) দাম্পত্য কলহের জের ধরে দুবাই প্রবাসী স্বামীকে কুপিয়ে হত্যার পর স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে গভীর রাতে পালিয়ে যায়। শুক্রবার (২০ আগস্ট) সকালে ঘটনাটি জানাজানি হলে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে নিহতের ক্ষত বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত ওই প্রবাসীর নাম মো. সোহেল (৩৫)। তিনি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুনবতী ইউনিয়নের খাটরা গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। সোহেল প্রায় ১২ বছর ধরে দুবাই ছিলেন। ৮ বছর আগে দেশে ফিরে তিনি চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথ ইউনিয়নের খাজুরিয়া গ্রামের আবুল কালামের মেয়ে শিউলি আক্তারকে বিয়ে করেন। এরপর তিনি আবার দুবাই চলে যান। পরে আসা যাওয়ার মধ্যে ছিলেন সোহেল। পরিবারও থাকতো সোহেলের গ্রামের বাড়িতে।
বছর দেড়েক আগে সোহেল সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য ফেনীর শহরের সুফি সদর উদ্দিন সড়কে চৌধুরী সুলতানা ভবন নামের একটি বাড়ির ছয় তলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন তারা। সোহেল দুবাই থাকায় তার স্ত্রী শিউলি ও দুই সন্তান রিহান (৭) ও জান্নাতকে (৪) নিয়ে ওই বাসায় থাকতেন। দেড় মাস আগে ছুটিতে দেশে আসেন সোহেল।
নিহতের চাচাতো ভাই ফাহাদ উদ্দিন মাহমুদ জানান, সোহেল ও শিউলী পরস্পর পরস্পরকে সন্দেহ করে প্রায় ঝগড়া বিবাদ হতো। ভবনের কেয়ার টেকার আবদুর রব জানান, রাত আনুমানিক আড়াইটায় তাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে শিউলী বলে তার বাবা মারা গেছেন। তিনি বাড়ি যাবেন। গেইট খুলে দিলে শিউলী দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যান।
শুক্রবার সকালে পাশের ভবনের ছয় তলার পরিবার প্রথমে বারান্দার দরজা দিয়ে রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা ছুটে আসেন। চলতে থাকে শোকের মাতম। এদিকে ভবনকে ঘিরে উৎসুক মানুষের ভিড় জমে। এলাকায় জনমনে ছড়িয়ে পড়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ফেনীর পুলিশ সুপার খন্দকার নুরুন্নবী জানান, প্রাথমিক তদন্তে তার স্ত্রী শিউলীকে হত্যাকারী হিসেবে শনাক্ত করে তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। সিআইডির ক্রাইমসিনের এক দল বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেন।