আবদুল্লাহ আল মামুন :
ফেনীর সোনাগাজীতে প্রতিপক্ষের হামলায় বেলায়েত হোসেন নামের এক কৃষক নিহত হয়েছেন। সোমবার সকালে উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের দক্ষিন চরদরবেশ গ্রামের হাদা ব্যাপারীর দোকান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হামলায় নিহতের ভাই নুর নবী মাসুদও গুরুতর আহত হয়েছেন।
হতাহতরা ওই গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে। স্থানীয়দের ভাষ্য, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে হামলার ঘটনাটি ঘটে।
নিহতের ভাই ননা মিয়া জানান, ফজরের নামাজের পর তার দুই ভাই মহিষের দুধ সংগ্রহ করতে চরাঞ্চলে যাচ্ছিলেন। পথে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা উপজেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াস উদ্দিনের দেহরক্ষী আবুল হাসেম বাহিনী তাদের ওপর হামলা চালায়। এসময় হাসেম ও তার সহযোগীরা তার দুই ভাই বেলায়েত ও নুর নবী মাসুদকে রাম দা দিয়ে উপর্যপুরি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। তাদের আত্ম চিৎকারে স্থানীয়দের সাথে নিয়ে তারা এগিয়ে গেলে অভিযুক্ত সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে দ্রুত তাদের দুইজনকে উদ্ধার করে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উভয়কে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে বেলায়েত হোসেন মারা যান। মাসুদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তিনি আরো জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিপক্ষ আব্দুস শুক্কুরের ছেলে সন্ত্রাসী আবুল হাসেম তার ভাইকে হত্যা করেছেন।
এদিকে বেলাল ও মাসুদের ওপর হামলার খবর জানাজানি হলে উত্তেজিত এলাকাকাসী অভিযুক্ত আবুল হাসেমের বাড়ি ঘেরাও করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাড়ি থেকে অভিযুক্ত আবুল হাসেমসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে। এসময় তাদের বসতঘর তল্লাশি করে পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি রাম দা উদ্ধার করে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সুফিয়ান বলেন ,জমি নিয়ে বিরোধের জেরে হামলার ঘটনাটি ঘটেছে। ৭ মাস আগে বাড়ির চলাচলের রাস্তার মালিকানা নিয়ে ননা মিয়া ও শুক্কুরের মধ্যে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সংঘর্ষ হলে ননা মিয়াসহ ৫/৬ জন আহত হয়। এ নিয়ে থানায় পাল্টাপাল্টি মামলাও হয়। তার অভিযোগ, স্থানীয় সমাজপতিরা বিরোধ নিরসনের উদ্যোগ নিলে বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিনের ইন্ধনে আবুল হাসেম সমঝোতার চেষ্টা ভেস্তে দেয়।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম পলাশ বলেন, নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।