24 C
Bangladesh
Friday, November 15, 2024
spot_imgspot_img
Homeদুর্নীতিবাজারের ব্যাগে করে ২৫ লাখ টাকা বাছিরকে ঘুষ দেন ডিআইজি মিজান, আদালতে...

বাজারের ব্যাগে করে ২৫ লাখ টাকা বাছিরকে ঘুষ দেন ডিআইজি মিজান, আদালতে সাক্ষ্য দিলেন ফানাফিল্যা।

ডিআইজি মিজানুর রহমান ও দুদকের পরিচালক এনামুল বাছির। ফাইল ছবি
ডিআইজি মিজানুর রহমান ও দুদকের পরিচালক এনামুল বাছির। ফাইল ছবি
ঘুষ গ্রহণের মামলায় দুদকের বরখাস্ত হওয়া পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির এবং পুলিশের বরখাস্ত হওয়া ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪–এ সাক্ষ্য দেন মামলার বাদী দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা। আগামী ২ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করেছেন ওই আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম।

এর আগে কারাগারে থাকা আসামি খন্দকার এনামুল বাছির এবং মিজানুর রহমানকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা বলেন, আসামি খন্দকার এনামুল বাছির দুদকের কর্মকর্তা হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মিজানুর রহমানকে অবৈধ সুবিধা দেওয়ার জন্য ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেন। অন্যদিকে মিজানুর রহমান সরকারি কর্মকর্তা হয়ে নিজের বিরুদ্ধে আনা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে রেহাই পেতে দুদকের পরিচালক এনামুল বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দেন। মিজানের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের বিষয়টি দুদক অনুসন্ধান করার সিদ্ধান্ত নেয়। অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয় এনামুল বাছিরকে। অনুসন্ধান চলাকালীন ২০১৯ সালের ৯ জুন বিভিন্ন গণমাধ্যমে এনামুল বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছেন মিজানুর রহমান—এমন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। মিজানুর রহমান গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে ঘুষ দেওয়ার বিষয়টি জাতির সামনে স্বীকার করে নেন। তিনি তখন জানান, এনামুল বাছিরকে তিনি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছেন। বিষয়টি দুদকের নোটিশে এলে শক্তিশালী একটি বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির কাছে লিখিতভাবে এনামুল বাছির ঘুষের টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন।

মামলার বাদী শেখ ফানাফিল্যা আদালতে বলেন, সরেজমিন অনুসন্ধানকালে দেখা যায়, মিজানুর রহমান ২০১৯ সালের ১৫ জানুয়ারি একটি বাজারের ব্যাগে করে ২৫ লাখ টাকা এনামুল বাছিরকে দেওয়ার জন্য রমনা পার্কে মিলিত হন। আলোচনা শেষে রমনা পার্ক থেকে মিজানুরের গাড়িতে ওঠেন খন্দকার এনামুল বাছির। পরে গাড়িটি যখন শাহজাহানপুরে থামে, তখন মিজানুর রহমান ২৫ লাখ টাকা এনামুল বাছিরের হাতে তুলে দেন। পরে এনামুল বাছির গাড়ি থেকে নেমে বাসার দিকে রওনা হন। একইভাবে ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি মিজানুর রহমান তাঁর আরদালি সাদ্দাম হোসেনকে নিয়ে উত্তরার বাসা থেকে রওনা হন। পরে রমনা পার্কে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন বাছির। তারপর মিজানুরের গাড়িতে উঠে শান্তিনগরে আসেন এনামুল বাছির। তখন মিজানুর রহমানের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নেন এনামুল বাছির। এ ছাড়া এনামুল বাছির মিজানের কাছে একটি গাড়ি দাবি করেন। আর গাড়ি দাবি করার বিষয়টি লিখিতভাবে দুদকের কাছে স্বীকারও করেন বাছির। মামলার বাদী শেখ মো. ফানাফিল্যা আদালতকে জানান, মিজান ও এনামুল বাছির বেআইনিভাবে অন্যের নামে দুটি সিম ব্যবহার করে নিজেরা খুদে বার্তা আদান-প্রদান করতেন। একটি সিম কেনা হয় মিজানের বডিগার্ড হৃদয়ের নামে, আরেকটি সিম কেনা হয় মিজানের আরদালি সাদ্দামের নামে। মিজানের নির্দেশে একটি সিম এবং মোবাইল এনামুল বাছিরকে দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে খুদে বার্তা আদান–প্রদানের বিষয়টি ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন (এনটিএমসি) মনিটরিং সেন্টারের ফরেনসিক কল রেকর্ডিং বিষয়টি প্রমাণিত হয়। এভাবেই মিজানুর রহমান ও এনামুল বাছির ঘুষ লেনদেন করেছেন।

এর আগে ১৮ মার্চ খন্দকার এনামুল বাছির ও মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ঘুষ লেনদেনের মামলায় গত ১৯ জানুয়ারি মিজানুর রহমান ও এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক।

সূত্রঃপ্রথম আলো

Most Popular

Recent Comments