মুজাহিদ হোসেন, জেলা প্রতিনিধি নওগাঁঃ নওগাঁ জেলার পাশ্ববর্তী জেলা রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বারুইপাড়া গ্রামে এক ঐতিহাসিক বাস্তব জীবনের পটভূমি সৃষ্টি হয়েছে। হারিয়ে যাওয়ার, ৭০ বছর পর কুদ্দুস মুন্সী ফিরে পেতে চলছে তার আপন ঠিকানা সহ প্রিয়জনদের।কুদ্দুস মুন্সী পিতা-মৃত কালু মুন্সী,মাতা- মঙ্গলেমা বয়স সম্ভবত ১১০ বছর এখনো জীবিত। পিতামহ/দাদা- সূর মোহাম্মদ সরকার, আদি নিবাস সাং- বাড্ডা(মুন্সীবাড়ী), থানা- নবীনগর, জেলা- কুমিল্লা(ব্রাহ্মণবাড়িয়া)। বর্তমান অবস্হান- গ্রাম- বাড়ুইপাড়া, থানা- বাগমারা, জেলা- রাজশাহী।আজ থেকে প্রায় ৭০ বছর আগে (কুদ্দুস মুন্সী /৮০)ছোট চাচার(পুলিশ কর্মকর্তা)সুবাদে বাগমারায় বেড়াতে আসেন। সেখানে থেকে কুদ্দুস মুন্সী বয়স যখন ১০ তখন বাগমারা থেকে হারিয়ে যান তিনি। অনেক খোঁজ করেও সন্ধান মিলেনি কুদ্দুছ মুন্সীর। বংশের ও গ্রামের লোকজন বলতে থাকে পুলিশ চাচা নিজ ভাইয়ের জমি আত্মসাৎ করার জন্য নিজের ভাতিজাকে খুন করে, বলছে হারিয়ে গিয়েছে। কারণ কুদ্দুছ মুন্সী ছিল তার বাবার একমাত্র ছেলে।কুদ্দুস মুন্সীর আরও ছোট ২ বোন ছিল, যাদের কথা তিনি স্মরণ করতে পারেননি।১০/১২ দিন আগে মোঃ আইয়ূব আলী, সিংসাড়া, আত্রাই, নওগাঁ এর একটি ভিডিও পোস্ট। সেখান কান্না জড়িত কন্ঠের আকুতি তুলে ধরা হয়, কুদ্দুছ মুন্সী কেবল তার নাম- কুদ্দুস মুন্সী বা ইদ্রিছ মুন্সী, পিতা- কালুমুন্সী, নবীনগর, সাং বাড্ডা। এই ভিডিওটি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে কুদ্দুছ মুন্সীর আসল তথ্য বের হয়ে আসে।ঘটনা চক্র –নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার সিংসাড়া নামক স্থানের এক ব্যক্তি সত্তর বৎসর পূর্বে কুদ্দুস মুন্সীকে কুঁড়িয়ে পেয়েছিল রাস্তায়। সেই থেকে কুদ্দুস মুন্সি এখানে লালিত-পালিত হয়ে বড় হয়ে উঠে।গড়ে তুলেছেন নতুন সংসার কিন্তু মা বাবাকে এবং পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকার যন্ত্রণা কে ভুলতে প্রতিনিয়ত তিনি অপলক দৃষ্টিতে খুঁজে বেড়াতে বাবা-মা আত্মীয়-স্বজন পরিবার-পরিজনদেরকে।কথায় আছে বিধাতার খেলা বোঝা বড় দায়।তাই সত্তর বৎসর পর কুদ্দুস মুন্সি ফিরে পেলো তার পরিবারকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের স্পর্শে।এলাকাবাসীরা বলেন কুদ্দুস মুন্সি পাকিস্তান পিরিয়ডে কুদ্দুস মুন্সি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে তার এক আত্মীয় বাগমারা থানায় ঘুরতে আসে। সেই সময় তার ঐ আত্মীয় বাগমারা থানায় পুলিশের চাকরি করতেন।সেখানে ঘুরতে এসে কুদ্দুস মুন্সি হারিয়ে যায় অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে তারাও পাওয়ার আশা ছেড়ে দেয়।কিন্তু বিধাতা চাইলে কি না করতে পারেন? তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই কুদ্দুস মুন্সি ও তার পরিবার। আজ হারানোর সব বেদনা ভুলে কুদ্দুস মুন্সির দুই পরিবারে বইছে সুখের হাওয়া।কুদ্দুস মুন্সি পেয়েছে বিছিন্ন হয়ে পরা পরিবার ও মা, মা পেয়েছে ৭০ বছর পূর্বে হারানো তার সন্তান। সবকিছু মিলে এখন সুখের সুবাতাস বইছে কুদ্দুস মুন্সির পরিবারে।