পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য দেওয়া নৌ অ্যাম্বুলেন্স পানিতে তলিয়ে রয়েছে।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য দেওয়া নৌ অ্যাম্বুলেন্স পানিতে তলিয়ে রয়েছে। প্রথম আলো
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি অযত্ন-অবহেলায় পড়ে রয়েছে। উপকূলের দূরবর্তী মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে উপহার হিসেবে অ্যাম্বুলেন্সটি পাওয়ার প্রায় এক বছর পার হলেও সেটি এখনো ব্যবহারই করা হয়নি। উল্টো তলা ফুটো হয়ে কয়েক দিন ধরে এটি আন্ধারমানিক নদের ফুঁসে ওঠা জোয়ারে তলিয়ে থাকতে দেখা যায়। এখনই এটি রক্ষণাবেক্ষণ করা না হলে পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপকূলের দূরবর্তী এলাকার মানুষের জরুরি প্রয়োজনে রোগী আনা-নেওয়ার কাজের জন্য এটি উপহার দেন। ২০১৯ সালের শেষ দিকে এটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়। এরপর এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকে স্থানীয় সাংসদ মো. মহিব্বুর রহমান অ্যাম্বুলেন্সটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। স্থানীয়রা অনেকেই অভিযোগ করে বলেছেন, উদ্বোধন হলেও কোনো সময়ই এই নৌ অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে রোগী পরিবহন করা হয়নি। বর্তমানে এটি কলাপাড়া পৌর শহরের হ্যালিপ্যাড মাঠের পূর্ব পাশে পড়ে রয়েছে।
জরুরি স্বাস্থ্যসেবার কাজের জন্য বরাদ্দ পাওয়া অ্যাম্বুলেন্সটি পানিতে ডুবে থাকা নিয়ে কলাপাড়া পৌর শহরের নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা মহসিন উদ্দিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছবিসহ স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তিনি সেখানে লিখেছেন, ‘ভালোবাসার উপহার নদীর গভীরতা মাপে’। এরপরই এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বইছে। নৌ অ্যাম্বুলেন্সের এমন দুরবস্থার চিত্রটি অনেকেই শেয়ার করে তাঁদের ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন।
গাজী সাইফুল ইসলাম মিথুন নামের একজন লিখেছেন, ‘তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এটা শুধু একটি উপহার নয়, এটা আমাদের কলাপাড়ার বাসিন্দাদের জন্য একটি সম্পদ।’ ইয়াকুব খান নামের আরেকজন লেখেন, ‘জোয়ারে তলিয়ে গেলেও আবার ভাটায় শুকিয়ে যাবে। ডুবিয়ে চুবিয়ে শুকিয়ে যতক্ষণ এ দেহে থাকে প্রাণ।’ সজীব রায়হান লেখেন, ‘এটার পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কারও বেতন নেওয়া তো বন্ধ নেই।’
জানতে চাইলে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) চিন্ময় হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, দূরবর্তী এলাকা থেকে রোগী আনা-নেওয়ার জন্য এটা দেওয়া হয়েছে। তবে দূরের এলাকার কোনো লোক রোগী আনার জন্য কখনোই তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। ফলে এটি ব্যবহৃত হয়নি। তিনি আরও বলেন, কীভাবে যেন এর নিচ থেকে ফুটো হয়ে গেছে। মেরামতও করা হয়েছিল। এখন হয়তো মেরামত হওয়া স্থানটি আবার নষ্ট হয়ে গেছে, তাই পানিতে ডুবে যায়। নদীর পানির চাপ কমলে এটা তুলে মেরামত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সূত্রঃপ্রথম আলো