রাবি প্রতিনিধি:
মধ্য রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হল থেকে এক শিক্ষার্থীকে সীট থেকে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এসময় অন্য আরেক শিক্ষার্থীকে ওই সীটে তুলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর।
গতকাল শনিবার (১৮ মে) দিবাগত রাত ১২ টার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৪০২ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হলেন মো. কুদ্দুস আলী। তিনি মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী।
বিভাগের এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে গত ১ মাস ধরে ওই আসনে থাকছিলেন এই শিক্ষার্থী। সম্প্রতি আবাসিকতার জন্য হলের প্রাধ্যক্ষকে আবেদন দিয়েছেন তিনি। এবং প্রধ্যাক্ষ ওই সীটে তাকে থাকতে বলেন। বিভাগের বড় ভাইয়ের নামে বরাদ্দ ওই আসনে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হওয়ার কথা। আগামী মাসে তার বড় ভাই এসে সীট ক্যান্সেল করে তার আবাসিকতা পাওয়ার কথা তার৷
জানা যায়, বঙ্গবন্ধু হলের ৪০২ নম্বর কক্ষে থাকতেন কুদ্দুস। রাত ১২ টার দিকে তাঁকে ঘুম থেকে তুলে আসন থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন বঙ্গবন্ধু হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত মো. ফজলে রাব্বি ও তাঁর অন্তত ৮/১০ জন অনুসারী। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের অনুসারী। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার’ নামের ফেসবুক গ্রুপে আজ সকালে পোস্ট করেন ভুক্তভোগী।
ফেসবুক পোস্টে ভুক্তভোগী উল্লেখ করেন, তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের একজন অনাবাসিক ছাত্র। বিভাগের বড় ভাইয়ের এলোট করা সিটে গত একমাস হলের ৪০২ নম্বর রুমে অবস্থান করছিলেন। এর মাঝে আবাসিকতার জন্য হলের প্রাধ্যক্ষকে আবেদন করেন। প্রাধ্যক্ষ আবেদন গ্রহণ করে তাকে ওই সীটে থাকতে বলেন। আগামী মাসে বিভাগের ওই বড় ভাই ক্যাম্পাসে আসলে হল কাড এখনো সম্পূর্ণ হওয়ার কথা ছিলো। গতকাল রাতে আজকে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী এসে জোর করে সিট থেকে নামিয়ে দিয়ে অন্য একজনকে উঠিয়ে দেয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মো. কুদ্দুস ইসলামকে ঘটনা সম্পর্কে আজ জিজ্ঞেস করলে আজ সকালে তিনি বলেন, আমি ফেসবুক ফেসবুক পোস্টটি ডিলিট করে দিয়েছি। বিভাগের শিক্ষকেরা এই ঘটনা নিয়ে কথা বলতে নিষেধ করেছেন। আমাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে এই ব্যাপারে দ্রুতই সমাধান করা হবে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ফজলে রাব্বি বলেন, কুদ্দুস ইসলাম যে সিটে উঠতে চেয়েছিলো সেই সিটে সে সহ আরো একজন থাকতো। তারা আমার কাছে সমাধান চাইতে আসলে আমি তাদেরকে বলি, এ ব্যাপারে হল প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে। আমাদের এই ব্যাপারে কোনো হস্তক্ষেপের অধিকার নেই। এরপর তারা দুইজন চলে যায়। বিছানাপত্র নামিয়ে দেয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাব্বি বলেন, এর সাথে ছাত্রলীগ বা আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ শাইখুল ইসলাম মামুন জিয়াদ বলেন, তিনি এই অভিযোগ সম্পর্কে জানলেও ফোনে এই ব্যাপারে কথা বলবেন না৷ তিনি বলেন, আমি এই ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে তারপর কথা বলবো। আর ফোনে আমি কোনো কথা বলবো না। সে কখন সময় দিতে পারবে এই প্রশ্ন করলে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
সিট থেকে নামিয়ে দেয়ার প্রসঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, তিনি এখনো এই বিষয়ে অবগত নন। দ্রুতই এই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে সিদ্ধান্তে আসা হবে।#