15.3 C
Bangladesh
Saturday, December 21, 2024
spot_imgspot_img
Homeরাবিরাবি ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানীরা

রাবি ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানীরা

রাবি প্রতিনিধি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মাদার বখ্শ ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল সংলগ্ন দোকানীরা। সংঘর্ষের দিনে চেয়ার-টেবিল এবং দোকানগুলোর বিভিন্ন মালামাল ভাঙচুর করাসহ নগদ ক্যাশও লুট করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

দোকানীরা বলছেন, আমরা নিজেরা কষ্ট করে উপার্জন করি, আমাদের জীবন এভাবেই চলে। সংঘর্ষে তারা (ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা) আত্মরক্ষায় আমাদের জিনিসপত্র ব্যবহার করে নষ্ট করেছে, কিন্তু আমাদের চলার খরচ দিবে কে?

অন্যদিকে ছাত্রলীগ নেতারা বলছেন, তারা এ বিষয়ে জানেন না। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।

এবিষয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল সংলগ্ন দোকানদার মানিক মিয়া জানান, ঘটনার দিন রাতে আমার দোকান বন্ধই ছিল কিন্তু বাহিরে থাকা ফ্রিজ ও ৪ ক্যাজ প্রানআপের কাচের বোতল ভেঙে ফেলা হয়। ফ্রিজে থাকা মালামালগুলো আমি আর খুজে পায়নি। সেই সাথে বাহিরে থাকা কাঠের টেবিলগুলোও ভেঙে ফেলা হয়। সব মিলিয়ে আমার প্রায় ২০ হাজার টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে।

ময়না হোটেলের মালিক জানান, সংঘর্ষের দিন আমাদের ৪টি বালতি ৩টি গামলা ৮-১০টি প্লেট, ১০টি গ্লাস, একটি বড় ধরনের পাতিল ভেঙে ফেলা হয়। সেইসাথে ক্যাশে থাকা নগদ প্রায় ৩ হাজার টাকা তারা লুট করে নিয়ে যায়। আসলে আমাদের দেখার মত কেউ নেই। আমরা নিজেরা কষ্ট করে উপার্জন করি এবং আমাদের জীবন এভাবেই চলে। তাদের আত্মরক্ষায় আমাদের ড্রামের ঢাকনা ব্যবহার করা হয়েছে কিন্তু আমাদের চলার খরচ দিবে কে?

চা বিক্রেতা বেলাল মিয়া জানান, ১১ মে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে তার ৩টি কাঠের টেবিল, ৪টি প্লাস্টিকের টুল, ২টি কাচের বিস্কিটের বক্স ও ৪টি চায়ের কাপ ভেঙে ফেলা হয়েছে। এতে সবমিলিয়ে তার প্রায় ৪হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।

আরেক দোকানদার শরিফুল ইসলাম বলেন, সেদিন আমার দোকান বন্ধ ছিল, কিন্তু বাহিরে রাখা তিন হাজার টাকা দামের একটি টেবিল তারা ভেঙে ফেলে। আমাদের এ দায়ভার নেওয়ার মতো কেউ নেই। আমরা এখন ক্ষতিপূরণ কার কাছে চাইবো? এছাড়াও আশেপাশে থাকা আরও তিন-চারটি দোকানের কয়েকটি কাঠের চেয়ার, টেবিল ও টুল ভেঙে  ফেলা হয় বলে দোকানীদের সঙ্গ কথা বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব বলেন, আমি তো সেখানে কয়েকদিন গেছি। আমাকে এ বিষয়ে কেউ কিছু জানায়নি, অভিযোগও করেনি। কেউ যদি এমন অভিযোগ করে, তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর পেপসির বোতলগুলো নিয়াজরা (শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক) নিয়ে গেছে।

যদিও সংঘর্ষের দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান কমিটির সভাপতি সম্পাদকের বিপক্ষ অবস্থান নেয়া ছাত্রলীগ নেতা নিয়াজ মোর্শেদ ও তার অনুসারীদের দোকান সংলগ্ন জায়গাগুলোতে অবস্থান নিতে দেখা যায়নি। এই পক্ষটি সেদিন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের অভ্যন্তরে অবস্থান নিয়েছিল।

জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, আমি এ বিষয়ে জানিনা। দোকানদারদের পক্ষ থেকেও কোনো অভিযোগ করা হয়নি। তারা যদি অভিযোগ করে, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় এই বিষয়টি অবশ্যই দেখব।

এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের অতিথি কক্ষে বসাকে কেন্দ্র করে গত ১১ মে রাবি শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষেও মধ্যে ককটেল বিস্ফোরণ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও দফায় দফায় রামদা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে জড়ানো ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ হলো- বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান এবং শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (বহিষ্কৃত) ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ।

এ ঘটনায় ১৪ মে রাতে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শাহিনুল সরকার ডন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মোর্শেদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান অপু ও সাংগঠনিক সম্পাদক কাবিরুজ্জামান রুহুলকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। বহিষ্কৃতরা সবাই বর্তমান কমিটির বিপরীত পক্ষ হয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান করছিলেন।#

তারিফুল ইসলাম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

Most Popular

Recent Comments