নিজস্ব প্রতিবেদক:
দুদক আমলাদের সেইফ ঘর।
এখানে অনায়াসে ০৫-১০ বছর ঢাকার মধ্য কোন চাপ ছাড়াই জবাবদিহিতা ছাড়াই চাকরি করেন তারা। তাছাড়া দুদক নামের সুবাদে তারা তাদের প্রমোশন খুব সহজেই পেয়ে যান। প্রেষনে ০৩ বছর থাকার কথা থাকলেও তারা বেশি সময় দুদকে আরামে কাটিয়ে দেন। কারণ আজ পর্যন্ত আমলারা দুদক নিয়ন্ত্রণ আর সবার ওপর ক্ষমতা দেখালেও নিজেরা একটি মামলা কিংবা চার্জশিট দেন নি। তাছাড়া তারা এখানে কোন তদন্ত, অনুসন্ধান করেন না। অথচ নিয়মিত তারা দুদকে তদন্ত শিখতে বিদেশে প্রায় প্রশিক্ষণে গিয়েছেন।করোনা পরিস্থিতিতে দুদক সবসময় কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু যখনই পদোন্নতির কথা আসে তখন বিভিন্ন খোড়া অজুহাত দেখিয়ে দুদক কর্মকর্তাদের প্রমোশন দেয়া হয়নি।
বিগত করোনার মধ্য সরকারের একাধিক বিভাগ পুলিশ, প্রশাসন, ট্যাক্স, সমবায়, হিসাব বিভাগ, সড়ক বিভাগ কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু দুদকের নিজস্ব কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেয়া হয়নি। এমন কি দুদকে ডেপুটেশন আসা জনাব প্রণব কুমার তথ্য অফিসার, জনাব রফিকুল ইসলাম এএসপি থাকা অবস্থায় দুদকে পদোন্নতি পেয়ে আবার দুদকেই চাকরি কররছেন।স্বাধীন প্রতিষ্ঠান দুদকে আমলারা এসেই কৌশলে দুদক কর্মকর্তাদের পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করেছেন।
আমলারা সব সময় দুদক কর্মকর্তারা যাতে পদোন্নতি না পায় সেটাই তারা করে গেছেন। দুদকে নিজস্ব কর্মকর্তাদের পদোন্নতি নেই, কিন্তু আমলাদের দুদকে এসেই তাদের পদোন্নতি মসৃণ করেছেন। পদোন্নতির যোগ্যতা থাকা সত্তেও দুদক কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেন নি আমলারা। দুদকের মহাপরিচালক পদ ০১ টি বাদে সব তারা দখল করেছেন।
পরিচালক পদের ৫০% আমলারা দখল করছেন। দুদক হেড অফিসের গুরুত্বপূর্ণ উপপরিচালক পদেও তারা দখল করেছেন।
এভাবে তারা পদ দখল করে বসে থেকে দুদকের নিজস্ব কর্মকর্তাদের পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করেছেন। এ ব্যপারে প্রধানমন্ত্রির হস্তক্ষেপ কামনা করে দুদক কর্মকর্তারা।দির্ঘদিন একই পদে চাকরি করে দুদকের নিজস্ব কর্মকতা- কর্মচারীদের মনোবল ভেঙে গেছে। অনেকেই হতাশ হয়ে কাজের স্পৃহা হারিয়ে ফেলেছেন।
কারণ দীর্ঘদিন চাকরি করেও দুদকে পদোন্নতি নাই।
দুদকে সবার মাঝে এখন হতাশা কাজ করছে।
অপরদিকে দুদকে যোগ্যতা থাকার পরও বাইরে থেকে প্রেষণে লোক আনা হয়। যারা বাইরে থেকে দুদকে আসেন, তারা মামলা, তদন্ত, অনুসন্ধান কখনো করেন না এবং তাদের কখনই দুদকের কাজের ধরনের কোন অভিজ্ঞতা নাই। কিন্তু ভালো পোস্টগুলো তারা দখল করে রাখেন। এসব কারণে দুদকের কর্মকর্তারা হতাশ ও নায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত।কার্যত দুদকের মহাপরিচালক পদ আমলারা ডেপুটেশন এসে দুদকের ব্যক্তিদের DG পদে পদোন্নতি প্রদানে বাধা প্রদান করেছেন। পরিচালক পদেও তারা অধিকাংশ পদ দখল করেছেন। তাদের ডেপুটেশন এর জন্যই দুদকে যোগ্য, পরিশ্রমী মেধাবীদের পদোন্নতি দেয়া হয় না। উপরের পদগুলো দুদকের নিজস্ব কর্মকর্তাদের জন্য নির্ধারিত হলেও সেখানে আমলারা জোর কর চেপে বসে আছেন।কার্যত দুর্নীতি দমনের কাজ দুদকের কর্মকর্তাদের আমলাদের নয়। আমলরা দুর্নীতি দমনের অনুসন্ধান তদন্ত মামলা কোন কিছুই করেন না।অথচ তারা দুদকে এসে আসীন হয়ে আছেন। মাঠ পর্যায়ে আমলাদের দুর্নীতির বিষয়ে কখনো কোনো অভিযোগ আমলে নেয়া হয় না। কারণ দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উচ্চ পদগুলোতে আমলারা আসীন হয়েছেন। সেজন্যই তারা কোনো অভিযোগ আমলাদের বিরুদ্ধে গ্রহণ করেন না। অর্থাৎ আমলারা নিজেদের দুর্নীতি ঢেকে রাখার জন্যই কৌশলে দুদকে জোর করে অবস্থান করেন।কিন্তু দুদক এসব বেগম পাড়ার আমলাদের কোন খবরই নেন নি। পরিচালক এর পদ ২৯ টি যেখানে প্রেষনে কর্মরত উপ-সচিব ৯ জন, পদ ফাকা আছে ৬ জন অথচ পদোন্নতি যোগ্য আছেন ২৫ জন, উপপরিচালক পদ ফাকা আছে ১২১ টি যেখানে পদোন্নতি যোগ্য আছেন ৪১ জন, সহকারী পরিচালক পদ ফাকা আছে ২৩৩ টি পদোন্নতি যোগ্য আছে ৬০ জন, উপসহকারি পরিচালক পদ ফাকা আছে ৩০১ টি পদোন্নতি যোগ্য আছে ৮০ জন। কমিশনের জনবল কাঠামো তে পদ আছে ২১৪৬ জন এর মধ্যে ফাকা আছে ১১০৯ জন। সরকার যেখানে নতুন মতুন পদ সৃস্টির মাধ্যমে পদোন্নতির জটিলতা দূর করে সরকারি দপ্তরের সেবার মান বৃদ্ধি করছেন আর আমলারা সেখানে উলটো দিকে হাটছেন শুধু নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে। এভাবে চলতে থাকলে অনাকাংখিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে অনেকেই আসংখা করছেন।