17.5 C
Bangladesh
Sunday, December 22, 2024
spot_imgspot_img
Homeকমিটিসম্মেলনের দেড় বছরেও হয়নি নজিপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি

সম্মেলনের দেড় বছরেও হয়নি নজিপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি

মুজাহিদ হোসেন, জেলা প্রতিনিধি নওগাঁঃ

দেড় বছরের বেশি সময় পর কলেজ কমিটির অনুমোদন হতে যাচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে । তবে অভিযোগ উঠেছে, এসব পদে ফের স্থান পাচ্ছেন বিতর্কিতরা। ছাত্রত্ব নেই, নিষ্ক্রিয়, বেশি বয়স, বিএনপি পরিবারের সন্তান”

সম্মেলনের দেড় বছর পার হলেও নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি এখনো হয়নি। ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী নজিপুর সরকারি কলেজ মাঠে ছাত্রলীগের ওই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে ছাত্রলীগের সভাপতি সাব্বির রহমান রিজভী ও সাধারণ সম্পাদক আমানুজ্জামান সিউল উপস্থিত ছিলেন।

উক্ত সম্মেলন শেষে নজিপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের কমিটিতে পত্নীতলা উপজেলা আওয়ামীলীগ এবং নওগাঁ জেলা ছাত্রলীগের সমন্বয়ে নজিপুর সরকারি কলেজ বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ডিগ্রি পাস কোর্স শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রিদওয়ান ইসলাম রিয়াদ ও বি এ প্রথম বর্ষের ছাত্র স্কুল বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আলামিন সবুজ কে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করার সম্মতি জানান জেলা ছাত্রলীগ নেতারা।

পরবর্তীতে জেলা ছাত্রলীগ নেতারা কমিটির অনুমোদন করে কাগজ পাঠিয়ে দেবেন বলে আশ্বাস দেন । কমিটি ঘোষণার ব্যাপারে সবাই আশাবাদী হলেও জেলা পৌঁছেই কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়ে দেন জেলা ছাত্রলীগ নেতারা। এরপর দেড় বছর পার হলেও হয়নি নজিপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি।

২০১৩ সালের ডিসেম্বরে নজিপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ কমিটি গঠন করে ছাত্রলীগের তৎকালীন জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এরপর প্রায় ৭ বছর ধরে এই কমিটি দিয়েই চলছে কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম। দীর্ঘদিন কমিটি না হওয়ায় অনেকের মধ্যে হতাশা বেড়েছে। এছাড়াও অনেকে রাজনীতি ছেড়ে বিয়ে করে সংসারী হয়েছেন। এতো দীর্ঘ সময় কমিটি না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা রাজনীতিতে আগ্রহ হারাচ্ছে বলে মনে করছেন বর্তমান ও সাবেক অনেক নেতা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শর্তে কয়েকজন উপজেলা ছাত্রলীগ নেতারা জানান, আস্তান মোল্লা নামক এক ছেলে কে ছাড়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আমানুজ্জামান সিউল কমিটির অনুমোদন দিবেন না এমন জেদ ধরে বসেন। জানা যায় যে , আস্তান মোল্লার কলেজের ছাত্রত্ব নেই তার কলেজে ভর্তি হওয়া ৮ বছর হয়েছে তার ডকুমেন্টস তিনি ফেসবুকে অর্থাৎ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে একটি পোস্টে বহিঃপ্রকাশ করেন এ বিষয়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা ও জেলা ছাত্রলীগের নেতারাও এ বিষয়ে অবগত আছেন। আস্তান মোল্লা বলে বেড়াচ্ছেন আমি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হয়ে গেছি এই কথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের কানে পৌঁছার পর তারা খুব দুঃখ প্রকাশ করেন। এছাড়াও আস্তান মোল্লার বাবা , চাচা সহ তার পরিবারের সদস্যরা বিএনপির কমিটির পদে আছেন। এই ধরনের ছেলেকে কেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আমানুজ্জামান সিউল গুরুত্বপূর্ণ পদে আনতে চাচ্ছে আমরা বুঝতে পারছি না। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সুদৃষ্টি কামনা করেন তাঁরা। তা না হলে মেধাবী পরিশ্রমী ছাত্রলীগ কর্মীরা পরবর্তীতে কোনঠাসা হয়ে পড়বেন বলে মনে করেন তাঁরা।

এদিকে যে ব্যাক্তির কোন ছাত্রত্বই নেই, যে ছেলের বাবা, চাচা ও পরিবারের সদস্যরা বিএনপির পদে আছে। যার পরিবার সরকার পতনের জন্য লেগে আছে সবসময়। তাকে কিভাবে কলেজ ছাত্রলীগের পদে আনতে চাই এনিয়ে ক্ষুদ্ধ উপজেলা ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামীলীগের বহু নেতাকর্মীরা।

উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গাফফার এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমাদের প্রথম কন্ডিশন কলেজের ছাত্র হতে হবে। বিতর্কিত ব্যক্তিদের কমিটিতে না আনাই উওম বলে মনে করি। যারা ছাত্ররাজনীতিতে এক্টিভ সবসময় যারা পাশে থাকে তাদেরকেই পদে রাখতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা যখন নব্বই দশকের ছাত্র নেতা ছিলাম তখন আদর্শ নিয়ে ছাত্র রাজনীতি করেছি। এখন আদর্শ কতখানি ধারণ করে এ বিষয়ে আমি নিজেও বোধগম্য নয় এখনকার ছাত্র রাজনীতি নিয়ে আমি খুব চিন্তিত। আদর্শের কথা আমরা সবাই বলি কিন্তু আদর্শ কেউ আমরা রাখিনা। কলেজের নিয়মিত ছাত্র, যারা পড়ার টেবিলে থাকে, যারা কলেজে সময় দেই তাদেরকে ছাত্ররাজনীতিতে আনা সবেচেয়ে উওম বলে তিনি মনে করেন।

পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মিল্টন উদ্দীন এর কাছে এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, অবশ্যই কলেজ ছাত্রলীগের কমিটিতে আসতে হলে ছাত্রত্ব থাকতে হবে। তিনি আরও জানান আস্তান মোল্লা নামে এক বিএনপির নেতার ছেলেকে কমিটিতে আনার তোরজোর চলতেছে। সে একজন নেশাগ্ৰস্ত বলেও জানান তিনি। এই ধরনের ছেলে কমিটিতে আসলে ছাত্ররাজনীতি নষ্ট হয়ে যাবে বলেও জানান তিনি। তার ছাত্রত্ব নেই তাহলে কিভাবে সে কমিটি আসবে। আমি চাই এখানে স্বচ্ছ কমিটি দেওয়া হোক। কারণ পছন্দের লোক নির্বাচন না করে মেধাবী শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করার দাবি জানান তিনি।

ছাত্রত্ব না থাকার পরেও কেন গুরুত্বপূর্ণ পদে আনা হচ্ছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাব্বির জানান,আমাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অবিবাহিত,ছাত্রত্ব থাকা অবস্থা ছাড়া কেউ কমিটিতে আসতে পারবেনা,কলেজের প্রিন্সিপালের কাছে থেকে প্রত্যয়ন পত্র নিয়ে প্রমাণ করতে হবে যে সে ছাত্র ছিল।
তাছাড়া ছাত্রলীগের কমিটিতে কারো জায়গা হবেনা।

দীর্ঘ সময় নিয়ে গঠন করা কলেজ ছাত্রলীগ কমিটিতে বিতর্কিতরা ফের কীভাবে স্থান পাচ্ছেন, জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিউল বলেন,কে কী বললো সেটা দেখার বিষয় না,এটা আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার হতে পারে।আমরা গঠনতন্ত্রের বাহিরে কোন কমিটি করবনা।যে ছাত্র নয় সেতো অবশ্যই কমিটিতে স্থান পাবেনা।

Most Popular

Recent Comments