ইসমাঈল হোসাঈন,
গবেষক সিদ্দিক মাহমুদুর রহমানের সব বই-ই ব্যতিক্রমী। ফিরাস আল খাতিবের লেখা লস্ট ইসলামিক হিস্টরি বই সম্পর্কে হয়তো অনেকের জানা। তবে বাংলা ভাষার পাঠকদের কাছে বর্ষীয়ান এই অনুবাদক বইটিকে বাংলায় তুলে ধরেছেন। ইসলামের জাগরণ, বিস্তার, বার বার উত্থান-পতন এসব মিলিয়ে এক অসাধারণ ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে। বইটি রচনার মূল উদ্দেশ্য- মুসলিম সভ্যতার ইতিহাস সম্পর্কে পাঠককে ধারণা দেয়া। বিশেষ করে সপ্তম শতাব্দীর গোড়ার দিকে ইসলামের পুনঃপ্রবর্তনের পর থেকে আজ পর্যন্ত যা ঘটেছে, তা ইতিহাসের পাতায় পাতায়, নানা ঘটনার সন্ধিক্ষণগুলো নানাভাবে আবৃত। যা অনুধাবন করতে হলে জ্ঞানের গভীরতার প্রয়োজন। যা সব ধরনের পাঠকের জন্য সহজ নয়।
তাই সহজভাবে ইসলামের ইতিহাসের যে বর্ণনা বা উপাখ্যানগুলো প্রচলিত আছে, সেগুলো পাঠকের সামনে নিয়ে আসা হয়েছে এ বইতে।একান্ত আলাপচারিতায় লেখক জানিয়েছেন, খুব সচেতনভাবে যারা বিষয়গুলো জানতে চান কিংবা যারা ইতিহাসের ছাত্র এ বইটি তাদের জন্য নয়; বরং কিছুটা জানা-শোনা আছে এমন পাঠকের কাছে পৌঁছানোই এই বইয়ের প্রাথমিক উদ্দেশ্য।
সে কারণে বইটিকে চূড়ান্ত তথ্যভান্ডার হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না; বরং বইটি পঠকের মনে ইসলামের ইতিহাস জানার ব্যাপারে আগ্রহ বৃদ্ধি করবে নিশ্চিতভাবে এবং নতুন নতুন গবেষণার জন্য তরুণ গবেষকদের উদ্বুদ্ধ করবে বলে মত লেখকের। যেহেতু ইতিহাসের একটি প্রাথমিক গ্রন্থ, তাই বইটিকে তথ্যবহুল গবেষণার পথে যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবেও বিবেচনা করা যায়। এ বইটিতে যেসব তথ্য দেয়া হয়েছে তার বেশির ভাগই অন্যান্য গবেষকদের দীর্ঘদিনের গবেষণার ফসল। সেসব গবেষক এবং তাদের সৃষ্টিশীল কাজের নামগুলো কৃতজ্ঞচিত্তে বইটির শেষাংশে যুক্ত করা হয়েছে। যাতে পাঠক সেগুলো থেকে আরও বেশি উপকৃত হয়।
দিব্য প্রকাশ থেকে বের হওয়া ২৪০ পৃষ্ঠার বইটির মূল্য ধরা হয়েছে ৩৭৫ টাকা। রকমারি ডট কমেও পাওয়া যাচ্ছে বইটি।
সিদ্দিক মাহমুদুর রহমানের মোট প্রকাশিত বই ১১৮টি। ডাকটিকিট ও মুদ্রা গবেষণা বিষয়ক বই ১১টি, অনুবাদ ৮৫টি, অন্যান্য ২৬টি। তিনি ১৯৮৫ সাল থেকে বাংলাদেশের ডাকব্যবস্থা, ডাকটিকিট, আধুনিক ধাতব ও কাগজী মুদ্রা নিয়ে গবেষণা করছেন। এ বিষয়ে পথিকৃৎ ও একমাত্র ব্যক্তিও তিনি। তাঁর লেখা বই বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের ডাকটিকিট প্রদর্শনী থেকে ১২টি পুরষ্কার পেয়েছে। তিনি গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ ব্রিটেনের রয়েল এশিয়াটিক সোসাইটির “ফেলো” নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়াও ৩ হাজারের বেশি কবিতার অনুবাদ করেছেন তিনি। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন স্টাডিজ বিভাগে ভিজিটিং ফ্যাকাল্টি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।