20.6 C
Bangladesh
Saturday, November 23, 2024
spot_imgspot_img
Homeরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়৭৫৩ একরের ক্যাম্পাস জুড়ে নেই কোনো ফার্মেসি, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা।

৭৫৩ একরের ক্যাম্পাস জুড়ে নেই কোনো ফার্মেসি, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা।

রাবি প্রতিনিধি
প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থীর একটি ক্যাম্পাস। যার মধ্যে অন্তত ১০ হাজার শিক্ষার্থী অবস্থান করেন ১৭টি আবাসিক হলে। বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি মেডিকেল সেন্টার থাকলেও তার সেবা নিয়ে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। রাতে দেখা পাওয়া যায় না কর্মরত ডাক্তারদেরকে। পাশাপাশি ক্যাম্পাসে নেই কোনো ফার্মেসি। বিড়ম্বনায় বেশি পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে অবস্থান করা নারী শিক্ষার্থীরা।

বলছি দেশের দ্বিতীয় প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা। ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে স্মার্ট ক্যাম্পাস ঘোষণা করা হলেও অন্যতম মৌলিক অধিকার চিকিৎসা সেবায় পিছিয়ে রয়েছে এখনও অনেক দূরে।

ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, পুরো ক্যাম্পাসে নেই কোনো ফার্মেসির দোকান। সামান্য অসুস্থ হলেও ওষুধের জন্য যেতে হয় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কাজলা, বিনোদপুর কিংবা স্টেশন বাজারে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অসুবিধার সম্মুখীন হন আবাসিক হলগুলোতে অবস্থান করা নারী শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফার্মেসির দোকানের আবেদন করেও মিলেনি অনুমতি। এক্ষেত্রে প্রশাসন এক নিরব, নিশ্চিহ্ন ভূমিকায়। অথচ পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে নামে-বেনামে, বৈধ-অবৈধ মানহীন খাবারের দোকানের ছড়াছড়ি দেখে বুঝার উপায় নেই এটি একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।

নারী শিক্ষার্থীরা কি ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন এসব নিয়ে কথা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রহমতুন্নেসা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তারের সাথে। এই শিক্ষার্থী বলেন, মেয়েদের সবচেয়ে দূরের হল। হঠাৎ রাতে কোনদিন অসুস্থ হলে, ঔষধ কেনার জন্য বহুদূর যেতে হয়। আমাদের জন্য এটা খুবই কষ্টকর বিষয়। ক্যাম্পাসে যদি নিদিষ্ট কিছু স্থানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ফার্মেসির ব্যবস্থা কারতো তাহলে আমাদের এতদূরে যেতে হতো না। সহজেই আমরা প্যাড বা সাধারণ ঔষধগুলো পেয়ে যেতাম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ইশতিয়াক হিরা আরটিভিকে বলেন, একদিন ক্লাস চলছিল, আমার এক বন্ধুর খুবই জ্বর উঠছিল। তখন আমি যে তাকে কোনো একটা ঔষধ এনে দিব তার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। আমাকে রিকশায় করে কাজলা যেতে হয়েছে এবং সেখান থেকে একটি নাপা কিনে এনে তাকে দিতে হয়েছে। যদি ক্যাম্পাসের টুকিটাকি চত্বরে একটি দোকান পেতাম তাহলে এতদূর কষ্ট করে যেতে হতো না এবং আমাদের পড়াশোনার সময়টাও নষ্ট হতো না।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী রায়হান কবির আরটিভিকে বলেন, আমি মনে করি রাবি ক্যাম্পাসে বেশ কয়েকটি ফার্মেসির দোকান প্রয়োজন। যেহেতু ক্যাম্পাস অনেক বড় তাই এতো দূরে গিয়ে একটি রোগীর জন্য ঔষধ কেনা খুবই কষ্টকর। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

রাবি ছাত্র উপদেষ্টা আমিরুল ইসলামের সাথে শিক্ষার্থীদের এসব সমস্যা নিয়ে কথা হয়। ক্যাম্পাসে ফার্মেসির বিষয়টি জিজ্ঞেস করলে তিনি আরটিভিকে বলেন, ক্যাম্পাসে যে ফার্মেসী নেই, এ বিষয়টি নিয়ে আমরা নিজেরা মৌখিক ভাবে আলোচনা করেছি। উপাচার্য স্যার বিষয়টি আমলে নিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা যেন ভোগান্তির শিকার না হয়, সেজন্য আমি মনে করি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কিছু ফার্মেসির প্রয়োজন এবং আমরা এই বিষয়টি নিয়ে ভাবছি। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখছি।আশা করি খুব তাড়াতাড়ি এ বিষয়ে একটি সিন্ধান্তে পৌঁছাব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপ-উপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন আরটিভিকে বলেন, অনেকেই ফার্মেসির বিষয়টা দাবি করছে। আমি পদাধিকারবলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের সভাপতি। বিষয়টা নিয়ে কাজ করবো, মাথায় নিয়েছি আমি।

কতদিনের মধ্যে বাস্তবায়ন সম্ভব জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট করে কোন সময় বলা সম্ভব না এখন। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে মেডিকেল কমিটির এখনো কোনো বৈঠক হয়নি। পরবর্তী বৈঠকে আমি বিষয়টা উঠাবো। তাদের কাছে পরামর্শ চাইবো, কিভাবে পরিচালনা করা যায়, লোকেশন কোথায় হলে ভালো হয়। প্রয়োজনবোধে শিক্ষার্থীদেরও পরামর্শ গ্রুহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে তৎকালীন প্রশাসন একটি ফার্মেসি চালুর আশ্বাস দিলেও তা আশার মুখ দেখেনি।

Most Popular

Recent Comments