24 C
Bangladesh
Sunday, December 22, 2024
spot_imgspot_img
Homeঅভিযোগনওগাঁর বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলপনা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে মালির কাছে ঘুষ দাবির...

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলপনা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে মালির কাছে ঘুষ দাবির অভিযোগ

মুজাহিদ হোসেন, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ

মালি পদে চাকুরি টিকিয়ে রাখতে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে নওগাঁর বদলগাছী
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাঃ আলপনা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে।বৃহস্পবিার (২৮ জুলাই) জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন বদলগাছী
উপজেলা পরিষদের মালি মোঃ রফিকুল ইসলাম।
রফিকুলের অভিযোগ, বিগত ০১/১১/২০০৩ ইং তারিখ হতে অত্র উপজেলা পরিষদে মালি পদে ১৮ বছর যাবত সুনামের সহিত চাকুরি করে আসছি। হঠাৎ ‘উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলপনা ইয়াসমিন
স্যার আমাকে গত জানুয়ারি মাসের ২৭ তারিখে রাত ৮ টার দিকে এক আনসারের মাধ্যমে তাঁর বাসায় ডেকে নিয়ে বলেন, তোর চাকুরি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও পরিক্ষার মাধ্যমে হয়েছে কিনা। আমি বলি না স্যার তখন শুধু দরখাস্ত জমা দেওয়ার মাধ্যমে চাকুরি হয়েছে। তখন ইউএনও স্যার আমাকে বলেন, তাহলে তোর চাকুরি থাকবে না। আমি বললাম কেন চাকুরি থাকবে না স্যার? তোর চাকুরি থাকবে
না তুই এখন চলে যা তোর পরিবর্তে অন্য লোক নেয়া হবে। তখন আমি কাকুতি মিনতি করলে তিনি বলেন, ২ লাখ টাকা দিলে তোকে চাকুরিতে রাখার ব্যবস্থা করবো। তখন বলি আমি গরীব মানুষ স্যার এতো টাকা দেওয়ার মতো আমার সামর্থ্য নেই। দয়া করে আমার পেটে লাথি মারবেন না স্যার। আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তাঁর বাসার চাবি কেড়ে নিয়ে আমাকে বাসা থেকে বের করে দেন। পরবর্তীতে ফেব্রুয়ারি মাসে বিভিন্ন অনিয়ম দেখিয়ে আমাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়। আমি তার সন্তোষজনক জবাব দিয়েছি। তারপর থেকে আমাকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দেওয়া বন্ধ করেছে এবং ৭ মাস যাবত বেতন ভাতা ও বোনাস দেওয়া বন্ধ করেছে। আমার কোনও অপরাধ না থাকা সত্ত্বেও আমাকে চাকুরি থেকে দুরে রেখেছেন এবং অন্যায়ভাবে আমাকে চাকুরিচ্যূত করে অন্যকে চাকুরি দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন।
আমি দীর্ঘদিন যাবত অত্র উপজেলায় মালি পদে অত্যন্ত সৎ ও সুনামের সাথে চাকুরি করছি। অথচ ২ লাখ টাকা দিতে না পারায় আমাকে চাকুরি থেকে চলে যাওয়ার জন্য বারবার চাপ
দিচ্ছে। ৭ মাস যাবত বেতন/ভাতা ও বোনাস না দেওয়ার কারণে আমার বৃদ্ধা মা ও পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। সর্বশেষ ২৮ জুলাই (বৃহস্পতিবার) ইউএনও স্যার আমাকে তাঁর অফিসে ডেকে বাসা এবং উপজেলা ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যাওয়ার হুকুম দেন। আমি যেতে না চাইলে আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে অফিস থেকে বের করে দেন। পরবর্তীতে অফিসের স্টাফ শিল্পীর মাধ্যমে ফোন করে আমাকে বাসা ছেড়ে চলে যেতে বলেন। অন্যথায় তাঁর আনসার বাহিনী দিয়ে আমাকে জোরপূর্বক বাসা থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন। আমি খুব গরিব মানুষ ২ লক্ষ টাকা দেওয়ার মতো আমার সামর্থ্য নেই।

এমতাবস্থায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্যার আমাকে বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখিয়ে চাকুরি থেকে অব্যাহতি দিতে চাইছে। বর্তমানে আমি পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি এবং সংসার জীবনে হতাশ হয়ে পড়েছি। তাই এর প্রতিকার চেয়ে আমি জেলা প্রশাসক স্যারের
কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

বদলগাছী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল আলম খান বলেন, মালী রফিকুল ইসলাম ভদ্র একটি ছেলে, অনেক আগে থেকে এখানে চাকুরি করেন। এখন পর্যন্ত তার খারাপ কোনও দিক আমার নজরে আসেনি বা তার খারাপ তথ্য আমার জানা নেই। তার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলপনা ইয়াসমিনের সঙ্গে কথা বলেছি কিন্তু তিনি শোনেন নি। রফিকুলের পরিবর্তে অন্য একজনকে মালী পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা শুনছি। আর ইউএনও আলপনা ইয়াসমিন যোগদানের পর থেকেই বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলপনা ইয়াসমিন। তিনি কারও কথাই শোনেন না। নিজের খেয়াল-খুশি মতো চলেন। মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক
আচরণ করে আসছেন। উপজেলা প্রশাসনকে অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন তিনি।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসা. আলপনা ইয়াসমিন কে ২লাখ টাকা ঘুষ চাওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, সে কোনও স্থায়ী কর্মচারি নয়, দিন হাজিরা কর্মচারী। তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়নি। তার পরিবর্তে লোক নেওয়া হয়েছে। তাকে মৌখিকভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে নাকি লিখিত নোটিশের মাধ্যমে বাদ দেওয়া হয়েছে অপর প্রশ্নের উত্তরে বলেন রবিবারে অফিসে এসে কথা বলেন বলে ফোন কেটে দেন।

Most Popular

Recent Comments