আবদুল্লাহ আল মামুন:
‘শান্তি, শৃঙ্খলা, উন্নয়ন, নিরাপত্তায় সর্বত্র আমরা’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী ফেনী জেলা কমান্ড্যান্ট কার্যালয়ের আয়োজনে জেলা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৯ অক্টোবর) সকাল ১১টায় বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ফেনী জেলা কমান্ড্যান্ট কার্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে এই জেলা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় ফেনী জেলা প্রশাসক ও
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি’র বক্তব্য রাখেন ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী। মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী কুমিল্লা রেঞ্জের পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল বিভিএম, পিভিএমএস।
বিশেষ অতিথি’র বক্তব্য রাখেন, ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, লক্ষীপুরের রামগঞ্জ ১৮ আনসার ব্যাটালিয়ানের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) রোকসানা আক্তার বিভিএমএস, স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী ফেনী জেলা কমান্ড্যান্ট মোঃ জানে আলম সুফিয়ান পিএএম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন ফেনী জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) দীন মোহাম্মদ, চাঁদপুর জেলা কমান্ড্যান্ট উজ্জ্বল কুমার পাল, নোয়াখালী জেলা কমান্ড্যান্ট মোঃ আনোয়ার হোসেন সরকার, কুমিল্লা জেলা কমান্ড্যান্ট মোঃ শাহীদুল ইসলাম, লক্ষীপুর জেলা কমান্ড্যান্ট মোঃ সোহাগ পারভেজ, কুমিল্লা রেঞ্জের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সোহেল রানা সরকার প্রমুখ। এছাড়াও বক্তব্য দেন ভিডিপি’র দলনেত্রী হাফেজা আক্তার নিশি।
এসময় সাংবাদিক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, জেলার বিভিন্ন উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তারা, জেলার ৬ উপজেলার প্রায় ৩০০ জন আনসার-ভিডিপি সদস্য সদস্যরা সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নিজাম উদ্দিন হাজারী বলেন, আনসার ও ভিডিপি বাংলাদেশের একটি সর্ববৃহত সুশৃঙ্খল বাহিনী। এই বাহিনী সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা ও জন নিরাপত্তায় যেমন অবদান রাখছেন, ঠিক তেমনি বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধ, মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠাকালীন আনসার ও ভিডিপি’র সদস্যরা অনন্য ভূমিকা পালন করেছেন। বর্তমানে দেশের শান্তি-শৃংখলা প্রতিষ্ঠা এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে এ বাহিনীর সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সুশৃংখল এ বাহিনী যে কোন প্রয়োজনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এই বাহিনী আরও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবে। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, জাতীয় নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্র থেমে নেই। এই নির্বাচনকে যারা বানচাল বা বিশৃঙ্খলার অপচেষ্টা করবে তাদেরকে কঠোর হস্তে দমন করতে হবে এবং সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা এগিয়ে নিতে আবারও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে হবে, না হয় স্বাধীনতা বিরোধীরা ক্ষমতায় এলে খুন, ধর্ষণ, অগ্নিসন্ত্রাসসহ নানা অপকর্ম করবে। এ বাহিনীর পাশে আছি এবং থাকব।
মুখ্য আলোচক মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল তার বক্তব্যে বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নানা অপশক্তি নানাভাবে তৎপর হয়ে ওঠে। কেউ কেউ মিথ্যা চালাচালি করে। কেউ কেউ গুজব ছড়ায়। এসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী দেশের সর্ববৃহৎ নিরাপত্তা বাহিনী। আনসার ভিডিপি সদস্যরা দেশপ্রেমের সঙ্গে নিষ্ঠা ও সততা নিয়ে দায়িত্ব পালন করে। বাহিনীর সদস্যরা দেশে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও বাল্যবিবাহ নির্মূলে কাজ করে যাচ্ছে। গ্রাম বাংলার আনাচে কানাচে এই বাহিনীর সদস্যরা ছড়িয়ে আছেন। তাদের কর্মতৎপরতাই দেশের শান্তি, মঙ্গল ও কল্যাণ বয়ে আনতে পারে। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং আভ্যন্তরীন আইনশৃংখলা রক্ষাসহ সার্বিক উন্নয়ন কর্মকান্ডে আনসার ও ভিডিপির সদস্য-সদস্যারা সক্রিয় ভূমিকা রেখে আসছেন। উন্নয়ন কর্মকান্ডের এই ধারাবাহিকতা রক্ষায় আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীকে আধুনিক মানের এবং আরো যুগোপযোগী করে গড়ে তোলা হচ্ছে। এ জন্য ব্যাপক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সদস্য-সদস্যাদেরকে প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলা হচ্ছে। এই প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে তারা নিজেরা সাবলম্বী এবং সুখি সমৃদ্ধ দেশ গড়ায় অবদান রাখছে।
পরে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে শান্তিশৃঙ্খলায় ভালো অবদান রাখায় আনসার ভিডিপি সদস্যদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়।
জেলা কমান্ড্যান্ট কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, ভালো কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ ও সংগঠনের কাজের গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে আনসার ভিডিপি সদস্য সদস্যাদের মাঝে ২১টি বাইসাইকেল, ৩টি সেলাই মেশিন, বেডশীট ও সম্মাননা স্মারক ক্রেস্ট প্রদান করা হয়েছে।
এর আগে জেলা সমাবেশের প্লাকার্ড উড়িয়ে ও কবুতর অবমুক্ত করে এ সমাবেশের উদ্বোধন করেন অতিথিরা।
অনুষ্ঠানে সঞ্চালনায় ছিলেন কুমিল্লা রেঞ্জের সার্কেল অ্যাডজুট্যান্ট মোঃ তানজির আজাদ ও ফুলগাজী উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা কামরুন নাহার মর্জিনা।