রাবি প্রতিনিধি
রাজশাহীর বারিন্দ মেডিকেল কলেজে চার ছাত্রনেতাকে আটকে রেখে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরির অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর চন্দ্রিমা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কুইক রেসপন্স টিম (সিআরটি) এসে প্রায় দুই ঘণ্টা পর তাদের উদ্ধার করে।
অভিযোগ রয়েছে, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের মালিকানাধীন ওই প্রতিষ্ঠানের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী ওই চারজনকে ‘চাঁদাবাজ’ বলে অপপ্রচার চালিয়ে সেখানে উত্তেজনা সৃষ্টি করেন।
আটক হওয়া চারজন হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক জি কে এম মেশকাত চৌধুরী মিশু, সংগঠনের জেলা কমিটির মুখ্য সংগঠক সোহাগ সরদার, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল বারী ও ছাত্রনেতা আল-সাকিব। তাদের মধ্যে মিশু ও সাকিব রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, আর বারী ও সোহাগ পড়েন রাজশাহী কলেজে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে তারা বারিন্দ মেডিকেল কলেজে গিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শামসুদ্দিনের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের ঘিরে ফেলেন এবং ‘চাঁদাবাজ’ বলে শোরগোল তোলেন। একপর্যায়ে তারা সেখানে আটকা পড়ে যান।
বারিন্দ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. বেলাল উদ্দীন বলেন, ‘তারা গতকাল এসে আমাদের সচিবের সঙ্গে কথা বলে গিয়েছিলেন। আজ আমার সঙ্গে বসার কথা থাকলেও তারা সরাসরি ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কক্ষে যান। এরপর আমাদের কিছু শিক্ষার্থী ও কর্মচারী প্রতিবাদ করেন।’
তিনি আরও জানান, ওই সময় কলেজে অনুষ্ঠান চলছিল, তাই আগে থেকেই পুলিশ মোতায়েন ছিল। পরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে সেনাবাহিনীকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে তাদের উদ্ধার করে চন্দ্রিমা থানায় নিয়ে যায়।
বারিন্দ মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বাবা মো. শামসুদ্দিন বলেন, ‘তারা আমার সঙ্গে কঠোর ভাষায় কথা বলছিল। তবে চাঁদাবাজির কোনো বিষয়ে এখনই কিছু বলতে চাই না।’ এরপর তিনি ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।
অন্যদিকে, ছাত্রনেতা মেশকাত মিশু এক লিখিত বক্তব্যে দাবি করেন, ‘আমরা বারিন্দ মেডিকেলের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করছিলাম। এ কারণেই আমাদের ফাঁদে ফেলে আটকে রাখা হয় এবং চাঁদাবাজ বানানোর অপচেষ্টা চালানো হয়।’
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ আসেনি। তাই ছাত্রনেতাদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
এই ঘটনার পর পরিস্থিতি এখন শান্ত থাকলেও ছাত্রনেতারা অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।