নিজস্ব প্রতিবেদক:
কুয়াকাটায় জমির মালিকানা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পৌর বিএনপির সভাপতি আবদুল আজিজ মুসুল্লী। রোববার সকাল ১০টার দিকে কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, যথাযথ দলিল ও কাগজপত্র থাকা সত্তেও একটি কুচক্রী মহল তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে অপ্র্রচার চালাচ্ছে।
লিখিত বক্তব্যে আবদুল আজিজ মুসুল্লী বলেন, “আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর কুয়াকাটা পৌর শাখার সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করছি। আমার রাজনৈতিক জীবনে কখনো দলীয় প্রভাব খাটিয়ে কোনো অবৈধ জমি দখল করিনি। একটি কুচক্রীমহল উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, পটুয়াখালী জেলার লতাচাপলী মৌজার এসএ খতিয়ান ১২২৭-এর আওতায় ৫১৭৮/১০০০২, ৫১৮০/১০০০৩ এবং ৫১৮৪/১০০০৪ নম্বর দাগে মোট ১৭.৫০ একর জমি রেকর্ডভুক্ত রয়েছে। যার মালিকানা আরজ আলী শেখসহ সাতজনের নামে। এর মধ্যে আরজ আলী শেখের ছেলে আবদুল আলী শেখের কাছ থেকে ১৯৯৭ সালের ২৫ ফেব্রæয়ারি ৫৮৩ নম্বর সাব কবলা দলিলের মাধ্যমে তিনি ও আরও পাঁচজন ০.২১ একর জমির মালিক হন। এতে তিনি সাড়ে তিন শতাংশ জমির মালিক।
আব্দুল আজিজ মুসুল্লী দাবি করেন, তিনি ১৯৯৭ সাল থেকে ওই জমিতে একটি অফিস ঘর নির্মাণ করে ভোগ দখলে ছিলেন। কিন্তু ২০০৮ সালে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে পটুয়াখালীর সাবেক পৌর কাউন্সিলর প্রায়াত মিলন মিয়া নেশাগ্রস্থ অবস্থায় এসে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং মিলন মিয়ার নেতৃত্বে তাঁর অফিস ঘরটি ভেঙে জমি দখল করে সেখানে আওয়ামী লীগ কার্যালয় নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল বারেক মোল্লা লাঠিয়াল বাহিনী নিয়া রাতের আঁধারে জমির পশ্চিম অংশে আওয়ামী লীগ অফিসটি স্থানান্তর করে আমার জমি অবৈধভাবে জবর দখল করে নেয়।
তিনি আরও বলেন, জমির দখল পুনরুদ্ধারের জন্য সেনা বাহিনী, মহিপুর থানা এবং কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিপক্ষ পক্ষকালক্ষেপণ এবং উপস্থিত হতে অপারগতা জানানোয় এখনো কোনো সমাধান হয়নি।
তবে আব্দুল বারেক মোল্লার পক্ষে আঃ সালাম গাজী বেল্লাল মোল্লার নামে ০৩-১০-২০২৪ খ্রিঃ তারিখের ৪৪৬৯ নম্বর একটি দলিল উপস্থাপন করেন। দলিলে দেখা যায়, তার মূল মালিকের জমির চৌহদ্দি আমার ৫৮৩ নম্বর দলিলের চৌহদ্দির উত্তর পার্শ্বে।
আমার খরিদীয় জমি বুঝ পাবার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে সমাধান না পেয়ে আমার দুই ছেলে জমি দখলমুক্ত করার জন্য ভাড়াটিয়া ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলেছেন। তারা আমার সাথে ভাড়া চুক্তিপত্র করতে অনাগ্রহ দেখালে ঘরে তালা মারা হয়েছে। কিছুক্ষণ পরে আবার তালা খুলে দেয়া হয়েছে।
তবে ব্যবসায়ীদের মধ্যে তিনজনে আমার সাথে ভাড়া চুক্তিপত্র সম্পাদন করেছেন। বাকীরাও চুক্তিপত্র করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, একটি কুচক্রি মহল তার ও তার পরিবারের সুনাম নষ্ট করার লক্ষে তাঁর দুই ছেলেকে জড়িয়ে গণমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রকাশ করানো হয়েছে। তিনি এসব অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে তিনি বলেন, “আমার জমি নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করতে এবং প্রকৃত তথ্য তুলে ধরার লক্ষ্যে আমি গণমাধ্যমের সহায়তা কামনা করছি।” ##