ইসমাঈল হোসাঈন,
আজকাল শিশু কিশোররা খাচায় পুরে রাখা প্রাণির মতো। রেডিমেড কেমিকেল খাবার, পিউরিফায়েড পানি, কৃত্রিম আলো, ফ্যান বা এসি আর চোখের সামনে বই। খেলা বলতে ভিডিও গেম। আজ থেকে এক শ বছর আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে একটা কল্পকাহিনী লিখেছিলেন, যার নাম ‘তোতা কাহিনী’
‘এক-যে ছিল পাখি। সে ছিল মূর্খ। সে গান গাহিত, শাস্ত্র পড়িত না। লাফাইত, উড়িত, জানিত না কায়দাকানুন কাকে বলে।
রাজা বলিলেন, ‘এমন পাখি তো কাজে লাগে না, অথচ বনের ফল খাইয়া রাজহাটে ফলের বাজারে লোকসান ঘটায়।’
মন্ত্রীকে ডাকিয়া বলিলেন, ‘পাখিটাকে শিক্ষা দাও।’ পরবর্তিতে সেই শিক্ষা পাখিটির মৃত্যুর কারণ হয়েছিলো।
প্রথমে পাখিকে রেডিমেড বড় খাঁচা বানিয়ে দেয়া হয়েছিলো বিদ্যা বেশি বোঝাই করার জন্য, যাতে আর যাইহোক খাঁচা নির্মাতার লাভ হয়েছিলো। পণ্ডিত মশাই পুঁথির বিশাল স্তূপ নিয়ে হাজির, নকল করা বিদ্যাগুলো গাঁদাগাঁদি করে পাখির পেটে ভরতে হবে। এতেও আর যাই হোক বখশিশ মিললো পণ্ডিতের।
পাখির যা হবার তাই হলো, গান গাওয়া বন্ধ, চিৎকার করার ফাঁকটুকুও বোজা। আমাদের দেশের শিশুদের আমরা যেভাবে ঘরবন্দী করে মানুষ করছি তাতে শিশুর সামগ্রিক বিকাশ কীভাবে সম্ভব!
আজ দেখলাম একদল শিশুকিশোর নিজেরা কাজ করছে। নিজেদের আঙ্গিনা পরিষ্কার করে খেলার উপযোগী জায়গা বানাচ্ছে। ওদের মধ্যে ছিলো দিবাকর, হাসান, জিহাদ, নাবিল, সিফাত, সিয়াম, রিফাত ও জিতু। এমন চিত্র সারা বাংলাদেশে ফুটে উঠুক।
লেখক: শিশুপাঠ্য গবেষক, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংগ্রাহক ও সংবাদকর্মী।