17.5 C
Bangladesh
Sunday, December 22, 2024
spot_imgspot_img
Homeশিক্ষানতুন জাতীয় শিক্ষাক্রমে সাপ্তাহিক ছুটি দুইদিন।

নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রমে সাপ্তাহিক ছুটি দুইদিন।

শফিকুল ইসলাম(এমএ)
স্টাফ রিপোর্টারঃ-

নতুন শিক্ষাক্রমে বদলে যাচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষার্থীদের ওপর থেকে চাপ কমিয়ে পড়াশোনার পরিবেশ আনন্দময় করতে গত সোমবার নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুমোদন করেছে সরকার।

এদিকে আগামী বছর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করে ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে ধাপে ধাপে এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। মাদ্রাসা ও কারিগরির শিক্ষার্থীদেরও নতুন এই শিক্ষাক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। তবে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা আগের মতোই ব্রিটিশ কাউন্সিলের সিলেবাস অনুযায়ী পড়বে। কওমি মাদরাসা নিয়ে কোনো কথা নেই।

নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী, প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা হবে না। এই চার ক্লাসে শিক্ষার্থীদের শুধু শিখনকালীন মূল্যায়ন করা হবে। চতুর্থ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ৪০ শতাংশ নম্বরের জন্য পরীক্ষা দেবেন, বাকি ৬০ শতাংশ নম্বর আসবে তাদের শিখনকালীন মূল্যায়নের মাধ্যমে। নবম-দশমে ৫০ শতাংশ নম্বরের জন্য পরীক্ষা, বাকি ৫০ শতাংশ নম্বর শিখনকালীন এবং একাদশ-দ্বাদশে ৭০ শতাংশ নম্বর পরীক্ষা এবং ৩০ শতাংশ নম্বর শিখনকালীন মূল্যায়নে দেওয়া হবে। পরীক্ষার নম্বরের সঙ্গে শিখনকালীন মূল্যায়ন যোগ করে মূল ফলাফল ঘোষণা করা হবে।

জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী, প্রাক-প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক স্তর এবং নবম থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত মাধ্যমিক স্তর হওয়ার কথা থাকলেও নতুন শিক্ষাক্রম সেভাবে হয়নি। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের একজন কর্মকর্তা বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতি পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়ায় পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মাধ্যমিক এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর ধরে নতুন শিক্ষাক্রম করা হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের আগেই সব শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ জন্য শিক্ষাক্রমের রূপরেখায় শিক্ষকদের স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণের প্রস্তাব করা হয়েছে। আগামী বছর থেকেই শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শুরু হবে। নতুন করে যারা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাবেন তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণেও নতুন পাঠ্যক্রমের বিষয়টি রাখা হবে। নতুন শিক্ষাক্রমে শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের নাম বদলে ‘ভালো থাকা’ করা হবে। এই বইয়ে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে শিক্ষার্থীদের শেখানো হবে।
২০২৩ থেকে নতুন শিক্ষাক্রম, যেসব পরিবর্তন আনলো সরকার
নতুন শিক্ষাক্রম চালু হলে প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুক্র ও শনিবার বন্ধ থাকবে। প্রাক-প্রাথমিকে ৫০০ ঘণ্টা, প্রথম-তৃতীয় শ্রেণিতে ৬৩০ ঘণ্টা, চতুর্থ-পঞ্চম শ্রেণিতে ৮৪০ ঘণ্টা, ষষ্ঠ-অষ্টম শ্রেণিতে ১০৫০ ঘণ্টা, নবম-দশম শ্রেণিতে ১১১৭.৫ ঘণ্টা এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে ১১৬৭.৫ ঘণ্টা শিখন সময় (বছরে) নির্ধারণ করা হয়েছে।

জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির মহাপরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রাথমিকের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। এখন তাদের যেভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে তাতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হবে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেলেই আমরা শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শুরু করব।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা অনুষদের অধ্যাপক মো. আবদুস সালাম মনে করেন, সব শিক্ষককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলেও ক্লাসরুম তার ভালো কিছু পাওয়া যায় না। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ছাড়া সৃজনশীল পদ্ধতি চালু করার ফল খারাপ হয়েছে।

Most Popular

Recent Comments